ইহাতে সাধারণে বাচস্পতি মহাশয়ের প্রতি দোষারোপ করিতে পারেন; কিন্তু এ বিষয় তর্কবাচস্পতি মহাশয়কে জিজ্ঞাসা করায় তিনি বলিলেন, “বহুবিবাহ অতি কুপ্রথা, শাস্ত্রবিরুদ্ধ না হইলেও এই প্রথা হইতে জগতের নানাপ্রকার অনিষ্ট হইতেছে এবং আমাদের সমাজের ততদূর বল নাই যে, সমাজ হইতে এই কুপ্রথা নিবারণ হইতে পারে; এই কারণে রাজদ্বারে আবেদনসময়ে ঐ আবেদন-পত্রে স্বাক্ষর করি। কিন্তু তা বলিয়া ইহা যে শাস্ত্রবিরুদ্ধ, তাহা আমি বলিতে পারি না।” এই কারণে দাদার সহিত তাঁহার বিচার হয়। এই বিচারে অগ্রজ মহাশয় বহুবিবাহ শাস্ত্রবিরুদ্ধ বলিয়া প্রতিপন্ন করেন।
১৮৬৯ খৃঃ অব্দে মল্লিনাথের টীকাসহিত মেঘদূতের পাঠাদিবিবেক মুদ্রিত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদিগের পাঠের জন্য ১৮৭১ খৃঃ অব্দে উত্তরচরিত ও অভিজ্ঞানশকুন্তল নাটকের স্বয়ং টীকা করিয়া মুদ্রিত ও প্রচারিত করেন।
অগ্রজ মহাশয়, জননীদেবীর মৃত্যুর পর অবধি দেশে আগমন করেন নাই সত্য বটে; কিন্তু জন্মভূমির লোকের হিতকামনায় দাতব্য-চিকিৎসালয় স্থাপন করিয়া দিয়াছেন, ডাক্তারখানায় সকলেই বিনা মূল্যে ঔষধ পাইয়া-থাকেন। এতদ্ব্যতীত যে সকল ভদ্র-কুলাঙ্গনা ডাক্তারখানায় না যান, প্রত্যহ একবার তাহাদিগকে এবং গ্রামের কি ভদ্র কি অভদ্র সকলের বাটীতে রোগীগণকে দেখিতে যাইবার জন্য, বিনাভিজীটে ডাক্তারের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। ৭৭।৭৮।৭৯।৮০ এই কয়েক বৎসর দেশব্যাপক ম্যালেরিয়া-জ্বরের প্রাদুর্ভাব হইলে, ডাক্তারখানার যেরূপ ব্যয় নির্দিষ্ট ছিল, তদপেক্ষা চতুর্গুণ ব্যয়বাহুল্যের ব্যবস্থা করিলেন। দরিদ্র রোগীগণ পথ্যের দরুণ সাগু, মিছারী প্রভৃতি পাইত, অনাথ ব্যক্তিদিগের অন্নের ব্যবস্থা করিয়া দিয়াছিলেন। দেশস্থ যে সকল নিরুপায়দিগকে মাসহরা দিতেন, তাহা যথাসময়ে পাঠাইতে বিস্মৃত হন। নাই। কেবল ম্যালেরিয়া-নিবন্ধন বিদ্যালয়ের ছাত্রগণ উপস্থিত হইতে না পারায়, অগত্যা বন্ধ করিতে বাধ্য হইলেন।