পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
২২৭

জন্য সহস্র টাকার অধিক বস্ত্র ক্রয় করিয়া বিতরণ করিতেন। শীতকালে জঙ্গলপ্রদেশে অত্যন্ত শীত হয়। সঁওতালদের গাত্রে শীতবস্ত্র নাই দেখিয়া, প্রতি বৎসর যথেষ্ট মোট চাদর ও কম্বল ক্রয় করিয়া তাহাদিগকে বিতরণ করিতেন। শীতকালে যথেষ্ট কমলালেবু ও কলসীখেজুর প্রভৃতি নানাপ্রকার উপাদেয় দ্রব্য কলিকাতা হইতে ক্রয় করিয়া লইয়া যাইতেন, এবং সাঁওতালদিগকে নিকটে বসাইয়া ঐ সকল দ্রব্য খাওয়াইতেন।

 সন ১২৭৯ সালের আষাঢ় মাসে অগ্রজ মহাশয়ের মধ্যম দুহিতা শ্রীমতী কুমুদিনীদেবীর বিবাহ হয়। বর শ্রীঅঘোরনাথ চট্টোপাপ্যায়, নিবাস রুদ্রপুর, জেলা চব্বিশ পরগণা।

 সন ১২৭৯ সালের মাঘ মাসে কাশী হইতে আমার বাটী যাইবার বিশেষ আবশ্যক হইলে, অগ্রজ মহাশয়কে পত্র লিখি যে, পনর দিবসের জন্য পিতৃদেবের শুশ্রূষ্যাদি কার্য্য নিম্পন্ন করেন, এরূপ কাহাকেও প্রেরণ করিবেন। পত্র পাইয়া তিনি ভাগিনেয় বেণীমাধব মুখোপাধ্যায়কে পাঠাইবার জন্য স্থির করেন। ঐ সময় তাঁহার জ্যেষ্ঠ জামাতা গোপালচন্দ্র সমাজপতি বহুদিন হইতে কায়িক অসুস্থ ছিলেন; তজ্জন্য দাদা তাহাকে জলবায়ু-পরিবর্ত্তন-মানসে কৃষ্ণনগর পাঠাইয়াছিলেন। তথায় সম্পূর্ণরূপ সুস্থ না হইয়া, কলিকাতায় প্রত্যাগমন করেন। বেণী, কাশী যাইবেন শুনিয়া, গোপালচন্দ্র, অগ্রজ মহাশয়কে বলেন, আমিও বেণীর সঙ্গে কাশী যাইব। এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করিলে, তিনিও সম্মত হইলেন। জামাতা, বেণীর সহিত কাশী গমন করেন। আমি উহাদিগকে রাখিয়া ২০শে মাঘ কলিকাতায় যাত্রা করি; তথায় দুই চারি দিবস অবস্থিতি করিয়া দেশে গমন করি।

 সন ১২৭৯ সালে ২৩শে মাঘ অগ্রজের জ্যেষ্ঠ জামাতা গোপালচন্দ্র সমাজপতি, বিসূচিকা রোগে আক্রান্ত হইয়া কাশীপ্রাপ্ত হন। ইহাতে বেণীমাধব, কাশীতে ক্ষণমাত্র অবস্থিতি করিতে ইচ্ছা না করিয়া, কলিকাতায় সংবাদ লিখিলে, দাদা শোকে অভিভূত হইলেন। পরে আমাকে সংবাদ লিখিলেন