পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৮
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

যে, পত্রপাঠমাত্রেই কাশী যাইয়া বেণীকে পাঠাইয়া দিবে। আমি আদেশপত্র পাইবামাত্র কাশী যাইয়া, ঘেণীকে কলিকাতায় পাঠাইয়া দিলাম। দাদা, জ্যেষ্ঠ জামাতার মৃত্যুর পর, তাহার মাতা, ভগিনী ও ভ্রাতাকে কলিকাতায় আনিয়া, স্বতন্ত্র বাটীভাড়া করিয়া রাখিলেন। নিজ হইতে সমস্ত ব্যয় দিয়া, তাহাদের রীতিমত তত্ত্বাবধান করিতে লাগিলেন। বিধবা তনয়া, মৎস্য ও রাত্রিকালের অন্ন পরিত্যাগ করিলে, তিনিও কিছু দিনের জন্য ঐ রূপ করিলেন, এবং কন্যার ন্যায় একাদশী করিতে আরম্ভ করিলেন। কিছুদিন পরে ঐ বিধবা-কন্যা হেমলতার অনুরোধে মৎস্য খাইতে আরম্ভ করিলেন এবং একাদশী করা বন্ধ করিলেন। ঐ কন্যার পুত্রদ্ধয়কে এরূপ ভাবে লালনপালন ও শিক্ষিত করিলেন যে, উহারা পিতৃহীন হইয়াও উহাদিগকে একদিনের জন্যও কোন ক্লেশ অনুভব করিতে হইল না। ঐ কন্যার দেবরের পালন ও শিক্ষার বন্দোবস্ত করিলেন, এবং ঐ কন্যাকে শোকে অভিভূত দেখিয়া, উহার হস্তে সাংসারিক ব্যয়-নির্ব্বহের ও তত্ত্বাবধানের ভার দিলেন। তদবধি আজ পর্যন্ত ঐ কন্যা সাংসারিক সকল বিষয়ের তত্ত্বাবধান করিয়া আসিতেছেন। দাদার অভিপ্রায়ানুসারে দয়াদাক্ষিণ্যাদিসহ সংসারকার্য্যের তত্ত্বাবধান করায়, ঐ কন্যা তাঁহার সমধিক স্নেহের ভাজন হইয়াছিল।


কাশী।

 সন ১২৮০ সালের অগ্রহায়ণ মাসের প্রারস্তে, পিতৃদেব অত্যন্ত পীড়িত হন। এই সংবাদ প্রাপ্তি-মাত্রেই অগ্রজ মহাশয়, কর্ম্মটার হইতে কাশী গমন করেন। কাশীতে তিনি প্রায় দুই সপ্তাহ কাল অবস্থিতি করেন; অনেক শুশ্রূষাদি দ্বারা পিতৃদেব সম্পূর্ণরূপ আরোগ্যলাভ করেন। দাদার উপস্থিতসময়ে, পিতামহীর একোদ্দিষ্টশ্রাদ্ধে মহারাষ্ট্রীয় ব্রাহ্মণগণকে ভোজন করান হয়। শ্রাদ্ধকালে তাঁহারা বেদপাঠ করিয়া থাকেন; তাহা শুনিবার জন্য অনেকেই আমাদের বাসায় উপস্থিত হইতেন। দাদা দেখিলেন যে,