পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
২৩৫

করিয়া বাটী প্রস্তুত করিতে ইচ্ছা করি, আপনার মত কি?” তাহাতে পিতৃদেব বলিলেন, “তুমি পুস্তক রাখিবার উপলক্ষে বাটী প্রস্তুত করিবে, এ সংবাদে পরম সন্তোষ লাভ করিলাম, ত্বরায় বাটী প্রস্তুতের উদ্যোগ কর।” দাদা, পিতৃদেবের বিনা অনুমতিতে কখন কোন কার্য্য করেন নাই।

 দাদা এক দিবস কথাপ্রসঙ্গে পিতৃদেবকে বলেন, “আয়ের হ্রাস হইয়াছে, যাহাদিগকে যাহা দিয়া থাকি তাহা বন্ধ করিতে পারিব না; ইত্যাদি নানা কারণে বড় দুর্ভাবনা হইয়াছে।” ইহা শুনিয়া পিতৃদেব, আমি ও বাবু অমৃতলাল মিত্র, আমরা তিন জনেই বলিলাম, “যাহাকে যাহা দিয়া থাকেন, তাহার কিছু কিছু কম করিয়া দেন।” ইহা শুনিয়া দাদা বলেন, “কেমন করিয়া তাহাদিগকে কমের কথা বলিব?” আমরা বলিলাম, “পিতৃদেবকে মাসে ৬০৲ টাকা পাঠান, অতঃপর ৪০৲ চল্লিশ টাকা পাঠাইবেন। ভ্রাতৃবর্গের প্রত্যেককে মাসিক যাবজ্জীবন ৭০৲ টাকা দিবার স্বীকার আছেন, যতদিন আপনার আয়ের লাঘব থাকিবে, ততদিন আমাদের প্রত্যেককে মাসে ৪০৲ টাকা দিলে চলিবে। এই হিসাবে যত লোককে মাসিক যাহা দিয়া থাকেন, সকলেরই কমাইয়া দিবেন। ফর্দের শিরোভাগে আমাদের নাম দেখিলে, কেহ আপনাকে বিরক্ত, করিতে পরিবেন না। যখন পিতা ও ভ্রাতার কম হইল, তখন তাঁহারা কোন আপত্তি করিতে পরিবেন না।” সেই সময় হইতে আমাদের সকলেরই মাসিক বৃত্তি কমিয়াছিল; কিন্তু আয় বৃদ্ধি হইলে, আমায় মাসিক ৪০৲ টাকার পরিবর্তে ৬০৲ টাকা দিয়া আসিতেছিলেন। আয় কম হইবার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে বলিলেন, “বর্ত্তমান ছোটলাট ক্যাম্বেল সাহেবের সহিত আমার মনান্তর হয়। মনান্তরের কারণ এই যে, কলিকাতা সংস্কৃতকলেজের স্মৃতিশাস্ত্রাধ্যাপকের পদ পাইবার সময় আমার সহিত পরামর্শ করিয়া, আমার উপদেশের বিরুদ্ধে ঐ পদ উঠাইবার আজ্ঞা দেন এবং প্রকাশ করেনু যে, এ বিষয় তিনি আমাদের সহিত পরামর্শ করিয়া কার্য্য করিয়াছেন। কিন্তু আমি ইহা দ্বারা সাধারণের ক্ষতি ও নিজের অপবাদ দেখিয়া ঐ বিষয় প্রকাশ