পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
২৪৭

কি? দূর হউক, গাছটা ত্যাগ করি; আমি ওসব হাঙ্গামে থাকিতে ইচ্ছা করি না।” ইহা শুনিয়া তিনি ক্রোধভরে বলিলেন, “তুই মর্, তাহা হইলে আমি স্বয়ং লাঠী হাতে করিয়া গাছের তলায় দাঁড়াইয়া ঐ গাছ রক্ষা করিব।” ইহা শুনিয়া তাঁহার প্রতিপালিত প্রিয়পাত্র বাবু নিজের উত্তেজনা স্বীকার করিয়া, আমাকে যে পত্র লিখিয়াছিলেন, ঐ পত্র দেখাইলাম। দাদা, পত্র লইয়া তাঁহার আত্মীয় উকীলদিগকে দেখাইয়া ও পরামর্শ লইয়া দুই তিন দিন পরে আমাকে বলিলেন, “এ সকল তোমার কর্ম্ম নয়, তুমি ঈশানের সহিত পরামর্শ করিয়া কার্য্য করিবে। এ বিষয়ের জন্য সর্ব্বস্বান্ত হইতে হয়, তাহাতেও পশ্চাৎপদ হইব না।” আমার মোকদ্দমার সময়, নবকুমারের জামাতা কেশবচন্দ্র ও বাদিনীর কয়েক জন সাক্ষীর জবানবন্দীতে বিচারপতি বাবু অক্ষয়কুমার বসু, তাঁহাদের মিথ্যাসাক্ষী প্রভৃতি দোষ উল্লেখ করিয়া, বাদিনীর জামাতাকে মীমাংসা করিতে উপদেশ দেন। অনেক বাদানুবাদের পর, আমি মীমাংসা করিতে সম্মত ছিলাম না, ঈশানের অনুরোধে সন্মত হইলাম; সোলেসুরত নিস্পত্তি হইল। তিনি যে কেবল মাতৃভক্তি ও পিতৃভক্তির পরাকাষ্ঠা দেখাইয়াছেন এমত নহে; পিতামহী-দেবীর প্রতিও আন্তরিক ভক্তি ছিল। তিনি নিজের স্বার্থসাধনোদ্দেশে কখনও আদালতে মোকদ্দমা উত্থাপিত করেন নাই।

মলয়পুর।

 গবর্ণমেণ্ট, বন্যা হইতে দামোদর-নদের পূর্বাংশের রেলপথ রক্ষার জন্য, নদীর পশ্চিমাংশের সেতু খুলিয়া দেন, এবং প্রায় দ্বাদশবর্ষ হইল, দামোদরের বেগের হানা বন্ধ হইয়া, জানকুলীর হানা দিয়া নদীর স্রোত পশ্চিমাংশে সরিয়া আসায়, দামোদর নদ, কেশবপুর . প্রভৃতি স্থানের সীমার মধ্য দিয়া স্রোত বহিয়া চলিতেছে। সুতরাং বর্ষাকালে মলয়পুর প্রভৃতি বহুসংখ্যক গ্রাম