পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

রাজকীয় ব্যক্তিগণ ইহাঁর হস্তেই সংস্কৃত-বিদ্যালয়ের গুরুতর ভার ন্যস্ত করিয়াছিলেন। মধুসূদন তর্কালঙ্কার ইহাঁর আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারি ছিলেন। কলেজের তৃতীয় বার্ষিক পরীক্ষার সময়, দত্ত মহাশয়, অগ্নীধ্র রাজার তপস্যাসংক্রান্ত কতিপয় কথা লিখিয়া, পরীক্ষার্থী ছাত্রগণকে এই বিষয়ের শ্লোক রচনা করিতে বলেন। অগ্রজের উক্ত বিষয়ের রচনা উদ্ধৃত করিলাম না। যেহেতু তাহার সংস্কৃত-রচনা-নামক পুস্তকে সেই সমস্ত মুদ্রিত হইয়াছে।

 ঐ সময়ে কলেজে নিম্ন-শ্রেণীর বালকগণকে একঘণ্টা কাল ভূগোল ও অঙ্ক শিক্ষা দেওয়া হইত, আর উচ্চ শ্রেণীর ছাত্রগণকেও একঘণ্টা কাল আইন শিক্ষা দেওয়া হইত। ঐ বিষয় শিক্ষা দিবার জন্য বাবু নবগোপাল চক্রবর্তী মহাশয় নিযুক্ত হইয়াছিলেন। দাদা, তৃতীয় বার্ষিক পরীক্ষায় দর্শনশাস্ত্রে সর্ব্বপ্রধান হইয়াছিলেন, তজ্জন্য ন্যায়ে ১০০৲ টাকা, কবিতা-রচনায় ১০০৲ টাকা, ক্লাসের মধ্যে হস্তাক্ষর সর্ব্বো‌ৎকৃষ্ট হইয়াছিল বলিয়া লেখার পুরস্কার ৮৲ টাকা, আইনের পরীক্ষায় সর্ব্ব‌প্রধান হইয়াছিলেন বলিয়া ২৫৲ টাকা, একুনে ২৩৩৲ টাকা পারিতোষিক পাইয়াছিলেন। পরে পিতৃদেব তীর্থপর্য্যটন করিয়া জলপথে কলিকাতায় সমুপস্থিত হইলে, পুরস্কারের সমস্ত টাকা পাইয়া পরম আহ্লা‌দিত হইলেন।

 কাব্যশাস্ত্রে অধ্যাপক জয়গোপাল তর্কালঙ্কার মহাশয়, ন্যায় ও স্মৃতির শ্রেণীর ছাত্রদিগকে মধ্যে মধ্যে কবিতা রচনা করিতে দিতেন। অনেকেই তাহার সমক্ষে বসিয়া কবিতা রচনা করিতেন; কিন্তু অগ্রজ মহাশয় তদনুসারে কবিতা-রচনায় কদাচ প্রবৃত্ত হইতেন না। বার্ষিক পরীক্ষায় রচনার পারিতোষিক পাইবার পর, জয়গোপাল তর্কালঙ্কার বলিলেন, “আর আমি তোমার কোন ওজর শুনিব না। অদ্য তোমায় কবিতা-রচনা করিতেই হইবে।” এই বলিয়া, তিনি পীড়াপীড়ি করাতে, নিতান্ত অনিচ্ছাপূর্ব্বক কবিতা রচনায় প্রবৃত্ত হইলেন।

 “গোপালায় নমোহস্ত মে”, এই চতুর্থ চরণ নির্দ্দি‌ষ্ট করিয়া তর্কালঙ্কার