পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চাকরি।

 ইং ১৮৪১ খৃঃ অব্দের ডিসেম্বর মাসে অগ্রজ মহাশয়, মাসিক ৫০৲ টাকা বেতনে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের প্রধান পণ্ডিতের পদে নিযুক্ত হইলেন। সিবিলিয়ানগণ বিলাত হইতে কলিকাতায় আসিয়া, প্রথমতঃ ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে বাঙ্গালা, হিন্দী প্রভৃতি শিক্ষা করিয়া পরীক্ষোত্তীর্ণ হইলে, জেলায় জেলায় বিচার-কার্য্যে নিযুক্ত হইতেন। যিনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইতে না পারিতেন, তিনি পুনর্ব্বা‌র পরীক্ষা দিতেন, তাহাতেও উত্তীর্ণ হইতে না পারিলে, স্বদেশে ফিরিয়া যাইতে হইত। সিবিলিয়ানদের মাসিক পরীক্ষার কাগজ অগ্রজকেই সংশোধন করিতে হইত। অধ্যক্ষ মার্শেল সাহেব, যখন সংস্কৃত-কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন, সেই সময়ে দাদাকে অসাধারণ-ধীশক্তি-সম্পন্ন এবং ব্যাকরণ, কাব্য ও অলঙ্কার-শাস্ত্রে অদ্বিতীয় পণ্ডিত বলিয়া বিশিষ্টরূপ পরিচয় পাইয়াছিলেন; তজ্জন্য অগ্রজের নিকট মুগ্ধবোধ ব্যাকরণ, রঘুবংশ, কুমারসম্ভব, শকুন্তলা, উত্তরচরিত, বিক্রমোর্ব্ব‌শী প্রভৃতি সংস্কৃত গ্রন্থ সকল অধ্যয়ন করিতে প্রবৃত্ত হন। তৎকালে অগ্রজ সামান্যরূপ ইংরাজী জানিতেন। একারণ, মার্শেল সাহেব বলেন, “ঈশ্বরচন্দ্র! তোমাকে রীতিমত ইংরাজী ও হিন্দীভাষা শিখিতে হইবে। যেহেতু, মাসে মাসে সিবিলিয়ান-বিদ্যার্থী‌ ছাত্রদের পরীক্ষার কাগজ দেখিয়া, দোষগুণ বিবেচনা করিতে হইবে।” সুতরাং অগ্রজ মহাশয় কয়েক মাস প্রাতে নয়টা পর্য্য‌ন্ত, এক হিন্দুস্থানী পণ্ডিতকে মাসিক ১০৲ টাকা বেতন দিয়া, হিন্দীভাষা শিক্ষা করেন। তাহাতে হিন্দী পরীক্ষার কার্য্য তাঁহার দ্বারা সুচারুরূপে নির্ব্বা‌হ হইতে লাগিল।

 তৎকালে তালতলানিবাসী বাবু দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় হেয়ার সাহেবের স্কুলের দ্বিতীয় শিক্ষক ছিলেন। তিনি প্রায়ই বৈকালে ২/৩ ঘণ্টা আমাদের বাসায় অবস্থিতি করিয়া, নানা বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক ও হিতগর্ব‌্ভ‌ গল্প