পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

পদ ও পুস্তকাধ্যক্ষের কর্ম্ম খালি হওয়াতে, সেক্রেটারি বাবু রসময় দত্ত মহাশয়, মফঃস্বলের চতুস্পাঠীর পণ্ডিতগণকে ঐ কর্ম্ম দিতে ইচ্ছা করিয়াছিলেন। কিন্তু ময়েট সাহেবকে জিজ্ঞাসা করাতে, মার্শেল সাহেব তাঁহার পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্রের পরামর্শানুসারে ময়েটু সাহেবকে বলিলেন, “মফঃস্বলস্থ টোলের পণ্ডিতের দ্বারা কলেজের ছাত্রদিগের অধ্যাপনাকার্য্য উত্তমরূপে নির্ব্বাহ হইবে না। অতএব কলেজেরই পরীক্ষাত্তীর্ণ পূর্ব্বতন ছাত্রদিগকে ঐ কর্ম্ম দিলে, অধ্যাপনা-কার্য্য ভালরূপে সম্পন্ন হইবে।” তদনুসারে সেক্রেটারি মহাশয়, দুই কর্ম্মে লোক নিযুক্ত করিবার জন্য, ব্যাকরণ-বিষয়ে নূতন পরীক্ষার ব্যবস্থা করিলেন। মফঃস্বলের পণ্ডিত প্রাণকৃষ্ণ বিদ্যাসাগর প্রভৃতি এবং সংস্কৃত-কলেজের কয়েকজন প্রসিদ্ধ ছাত্র পরীক্ষা প্রদান করিলেন। পরীক্ষায় দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ প্রথম ও গিরিশচন্দ্র বিদ্যারত্ন দ্বিতীয় হইলেন। তদনুসারে বিদ্যাভূষণকে ৫০ টাকা ও বিদ্যারত্নকে ৩০ টাকা বেতনে, উক্ত দুই পদে নিযুক্ত করা হইল। গিরিশচন্দ্র বিদ্যারত্ন সংস্কৃত কলেজে ফার্ষ্টগ্রেটের সিনিয়ার এসকলার্শিপ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন। তিনি অতি উপযুক্ত লোক ছিলেন। সাহিত্য ও অলঙ্কার-শাস্ত্রে তাঁহার বিশেষ অধিকার ছিল। তর্ক- বাচস্পতি মহাশয়, সংস্কৃত ভাষায় অদ্বিতীয় ‘লোক বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। সভায় বিচার করিবার ইহার বিশিষ্টরূপ ক্ষমতা ছিল। একারণ, বাচস্পতি মহাশয় বাঙ্গালাদেশে বিশেষ খ্যাতি ও প্রতিপত্তি লাভ করিয়াছিলেন। তর্কবাচস্পতি, বিদ্যাভূষণ ও বিদ্যারত্ন এই তিনজন উপযুক্ত লোক সংস্কৃত- কলেজে নিযুক্ত হইলেন। দাদা, সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়ন করিয়াছিলেন; একারণ কৌশল ও অনুরোধ করিয়া, তিন জন উপযুক্ত লোককে কলেজে প্রবিষ্ট করাইয়া দিয়া, পরম আহলাদিত হইয়াছিলেন। মার্শেল সাহেব, মাসিক ৯০ টাকা বেতনের উক্ত পদ অগ্রজকে দিবার মানস করিয়াছিলেন; কিন্তুতিনি তাহাতে স্বীকার না পাইয়া, বাচস্পতি মহাশয়ের দেশে গিয়া, তাঁহাকে অনুরোধ করিয়া আনাইয়া, কর্মে প্রবিষ্ট করাইয়া দেন, ইহাতে বিষয়ী লোক-