পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।


উপক্রমণিকা।

 দেশ-বিদেশের অনেক কৃতবিদ্য মহানুভব ব্যক্তি, সাধারণের নিকট যশস্বী হইবার মানসে—বিদ্যোৎসাহী, দেশহিতৈষী, অবলাবন্ধু, দয়াময়, আজন্ম-বিশুদ্ধচরিত, পূজ্যপাদ জ্যেষ্ঠাগ্রজ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবনচরিত লিখিতে প্রবৃত্ত হইয়াছেন শুনিয়া, স্বল্পমতি আমিও, ঐ সকল যশস্বী লেখকগণের ন্যায় জীবনচরিত লিখিতে প্রবৃত্ত হইলাম। এবিষয়ে আমি নিশ্চয়ই সাধারণের নিকট উপহাসাষ্প‌দ হইব। অথবা পাঠকবর্গ আমাকে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তৃতীয় সহোদর বলিয়া জানিতে পারিলে, অবজ্ঞা না করিতেও পারেন। আমি বাল্যকাল হইতেই অগ্রজ মহাশয়ের নিতান্ত অনুগত ছিলাম। তাঁহার জন্মভূমির কীর্ত্তিস্তম্ভম্বরূপ বীরসিংহবিদ্যালয়, বালিকাবিদ্যালয়, রাখালস্কুল, দাতব্য-চিকিৎসালয় ও বৃত্তিভোগী নিরুপায় দরিদ্রলোকদিগের মাসহরা বিলি, বিধবাবিবাহাদি কার্য্যসমূহ, এবং সন ১২৭২।৭৩ সালের বিষম দুর্ভিক্ষসময়ে প্রত্যহ সহস্ৰাধিক দরিদ্র লোকের প্রাণরক্ষাদি কার্য্য‌ আমার তত্ত্বাবধানে ছিল। আমি বাল্যকাল হইতে পিতামহী, মাতামহী ও জননীদেবীর প্রমুখাৎ তাঁহার বাল্যকালের যে সকল আচার-ব্যবহার, রীতিনীতি বিশিষ্টরূপ অবগত হইয়াছি, অদ্যাপি সেই সকল কথা আমার স্মৃতিপথে জাজ্জ্বল্যমান রহিয়াছে। অগ্রজ মহাশয় কাশীধামে বৃদ্ধ পিতৃদেবের শেষাবস্থায় তাঁহার শুশ্রষ্যাদি কার্য্যে প্রায় ৬/৭ বৎসর আমায় নিযুক্ত রাখিয়াছিলেন। তথায় পিতৃদেবের প্রমুখাৎ এবং আমি যৎকালে সংস্কৃত-কলেজে অধ্যয়ন করি, তৎকালে কলেজের ব্যাকরণের অধ্যাপক পূজ্যপাদ গঙ্গাধর তর্কবাগীশ, সাহিত্যা