পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৭৩

বিনা অনুমতিতে কি শিক্ষক কি ছাত্র কেহই ইচ্ছামত বিদ্যালয় হইতে বাটী যাইতে পারিবেন না। ছাত্রগণ ইচ্ছানুসারে একবারেই সকলে ক্লাশ হইতে বাহিরে মালীর গৃহে যাইতে পরিবে না; এক এক জন করিয়া যাইবে, কিন্তু তাহাও কাষ্ঠের পাশ গ্রহণ করিয়া যাইতে হইবে। অধ্যাপক ও বিদ্যার্থিগণ আবেদন ব্যতিরেকে অনুপস্থিত হইতে পরিবেন না। সাহিত্য-শ্রেণীতে যে সকল পুস্তক অধ্যয়ন করান হইত, তন্মধ্য হইতে অশ্লীল কবিতা-সমূহ রহিত করিয়া, অধ্যাপককে অধ্যয়ন করাইতে হইত। কলেজ, জুনিয়র ও সিনিয়র এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত হইল। তন্মধ্যে সাহিত্য ও অলঙ্কারের শ্রেণী জুনিয়র, এবং দর্শন, বেদান্ত ও স্মৃতির শ্রেণী সিনিয়র। জুনিয়ারের পরীক্ষায় ছাত্রবৰ্গকে পাঁচ দিন পাঁচ বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হইত। ব্যাকরণের প্রশ্ন হইত; কিন্তু ছাত্রগণ নীরস বলিয়া প্রায় ব্যাকরণ দেখিতে আলস্য করিত; সুতরাং ব্যাকরণে অনেক ছাত্র ফেলা হইত। একারণ, অগ্রজ মহাশয় মাসে মাসে ব্যাকরণের পরীক্ষা ও শিক্ষার ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। ব্যাকরণের প্রথম শ্রেণীর অধ্যাপক তারানাথ তর্কবাচস্পতি মহাশয়, যথানিয়মে উক্ত জুনিয়র ডিপার্টমেণ্টের ছাত্রগণকে উপদেশ দিতেন। সাহিত্য ও অলঙ্কারের অধ্যাপক, নিয়মানুসারে বাঙ্গালা-ভাষা হইতে সংস্কৃত অনুবাদ, সংস্কৃত-ভাষা হইতে বাঙ্গালা অনুবাদ ও শ্লোকের টীকা করাইতেন। তৎকালে নিয়ম ছিল, অলঙ্কারের শ্রেণী হইতে ছাত্রগণ লীলাবতী ও বীজগণিতের অঙ্ক শিক্ষা করিত; কিন্তু সাহিত্য-শ্রেণীর ছাত্রগণের মধ্যে কেহ অঙ্ক শিক্ষা করিবার জন্য জ্যোতিষের শ্রেণীতে যাইত না, এতদ্বিষয়েও কর্তৃপক্ষের কোন বন্দোবস্ত ছিল না; সুতরাং সাহিত্য-শ্রেণীর ছাত্রগণ অঙ্কে প্রায় ফেলা হইত। এজন্য অগ্রজ মহাশয়, যোগধ্যান শাস্ত্রীর শ্রেণীতে সাহিত্যশ্রেণীর ছাত্রগণের অঙ্ক শিক্ষা করিবার জন্য নূতন ব্যবস্থা করিয়া দেন। ঐ রূপে দর্শন ও স্মৃতির ছাত্রগণের, অলঙ্কার-শ্রেণীতে গিয়া নিয়মানুসারে অলঙ্কারগ্রন্থ শিখিবার ব্যবস্থা করিয়া দেন। অলঙ্কারের অধ্যাপক প্রেমচন্দ্র তর্কবাগীশ মহাশয়, ছাত্রবৰ্গকে রীতিমত সংস্কৃত গদ্য-পদ্য-রচনা ও বাঙ্গালা