পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৭৭

অধ্যয়নের অত্যন্ত গোলযোগ হইত। একারণ, ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের অধ্যক্ষ মার্শেল সাহেব মহোদয়, অগ্রজ মহাশয়কে একদিন বলেন যে, “ঈশ্বরচন্দ্র! তুমি কতকগুলি ভাল বাঙ্গালা পুস্তক ভাষান্তর হইতে অনুবাদ বা নূতন রচনা করিয়া মুদ্রিত ও প্রকাশিত কর, নচেৎ এখানকার ছাত্রগণের বাঙ্গালা-শিক্ষার অত্যন্ত অসুবিধা দেখিতেছি।” সাহেবের অনুরোধ শ্রবণে, অগ্রজ বলিলেন, “মহাশয়! আমি কি লিখিব, আদেশ করুন।” সাহেব বলিলেন, “তুমি ত হিন্দী বেতালপঞ্চবিংশতি রীতিমত অধ্যয়ন করিয়াছ। ঐ পুস্তক অবলম্বন করিয়া, হিন্দীভাষা হইতে বিশুদ্ধ বাঙ্গালায় অনুবাদ করা। আর সিরাজউদ্দৌলার সিংহাসনাধিরোহণ হইতে, ইংরাজদের বাঙ্গালা অধিকার পর্য্যন্ত মার্শমান সাহেবের রচিত ইংরাজি পুস্তক অবলম্বন করিয়া, সরল বাঙ্গালা-ভাষায় অনুবাদ কর। বেতালপঞ্চবিংশতির বাঙ্গালা ছাপাইতে যেমন অধিক বায় হইবে, তেমন গবর্ণমেণ্ট এখানকার লাইব্রেরীর জন্য একশত পুস্তক ৩০০৲ তিন শত টাকা মূল্যে গ্রহণ করিবেন। তাহাতে তোমার ছাপানর ব্যয় নির্ব্বাহ হইবে। অবশিষ্ট পুস্তক বিক্রয় করিয়া তুমি যথেষ্ট লাভ করিতে পরিবে। প্রথমতঃ মার্শেল সাহেবের উত্তেজনায় উৎসাহান্বিত হইয়া, তিনি হিন্দী বেতালের অনুবাদ করতে প্রবৃত্ত হইলেন। অল্পদিনের মধ্যে লেখা শেষ হইলে, ঐ পুস্তক লালবাজারস্থ রোজারীয় কোম্পানীর মুদ্রাযন্ত্রে মুদ্রিত হইয়াছিল।

 তিনি আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারির পদে প্রতিষ্ঠিত হইয়া, সংস্কৃত-কলেজের বন্দোবস্ত করায়, কলেজের সেক্রেটারি বাবু রসময় দত্ত মহাশয় ও এডুকেশন কৌন্সেলের সেক্রেটারি ডাক্তার ময়েট্ সাহেব, পরম সন্তোষ লাভ করিয়াছিলেন। তাঁহার বন্দোবস্তে অন্যান্য বৎসর অপেক্ষা এই বৎসরের এসকিলার্শিপ। পরীক্ষার ফল অনেক অংশে উৎকৃষ্ট হইয়াছিল। ঐ বৎসর ফাল্গুনমাসে পারিতোষিক-বিতরণ-কার্য্য সমাধার পর, অগ্রজ, ছোট ছোট ভাইগুলিকে কলিকাতায় রাখিয়া বাটী গমন করেন; ইহার কয়েক দিন পরে, দ্বাদশবৰ্ষীয়