পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

পণ্ডিত ছিলেন। কলেজের কর্ম্মাধ্যক্ষ বাবু রসময় দত্ত, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল হইতে, গণিতশাস্ত্রের অঙ্ক শিক্ষা দিবার জন্য লোক নির্ব্বচন করিয়া আনিবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন; কিন্তু অগ্রজের অভিপ্রায় ছিল যে, সংস্কৃত-কলেজের মধ্যে যিনি অঙ্কে প্রতিবৎসর পরীক্ষায় সর্বশ্রেষ্ঠ হইয়া থাকেন, ন্যায়বিচারে তাঁহারই এই পদ পাওয়া সর্ব্বতোভাবে বিধেয়। অতএব তিনি মনে মনে এইরূপ স্থির করিয়া, শিক্ষা-সমাজের প্রেসিডেণ্ট ও সেক্রেটারিকে অনুরোধ করিয়া বলেন যে, সংস্কৃত-কলেজের সকল ছাত্র অপেক্ষা প্রিয়নাথ ভট্টাচার্য্য প্রতিবৎসর অঙ্কের পরীক্ষায় সর্বোৎকৃষ্ট হইয়া থাকেন এবং কলেজের সকল ছাত্র অপেক্ষা তাহার অঙ্কে বুৎপত্তি জন্মিয়াছে। অন্যান্য বিষয়েও পরীক্ষায় গত বৎসর সর্ব্বোৎকৃষ্ট হইয়া প্রধান এসকিলাশিপ প্রাপ্ত হইয়াছেন। অতএব উক্ত পদ তাঁহারই পাওয়া উচিত। ইহা শ্রবণ করিয়া, শিক্ষাসমাজ, প্রিয়নাথ ভট্টাচার্য্যকে উক্ত পদে নিযুক্ত করেন। প্রিয়নাথ ভট্টাচার্য্য, কর্ম্মে নিযুক্ত হইয়া, আন্তরিক যত্নের রহিত বালকগণকে শিক্ষা দিতেন। এজন্য পূর্ববৎসর অপেক্ষা ঐ বৎসর পরীক্ষায় ছাত্রগণ অঙ্কে উৎকৃষ্ট হইয়াছিল। পরীক্ষায় পূর্ব্ব-বৎসর অপেক্ষা ফল ভাল হওয়াতে, অগ্রজ মহাশয়, প্রিয়নাথের প্রতি পরম সন্তুষ্ট হইয়াছিলেন।

 এই বৎসর শিক্ষাসমাজ, সংস্কৃত-কলেজের জুনিয়র ও সিনিয়র উভয় ডিপার্টমেণ্টের বাৎসরিক পরীক্ষার ভার অগ্রজ মহাশয় ও ডাক্তার রোয়ারের প্রতি অৰ্পণ করেন। কিন্তু অগ্রজ মহাশয়ই স্বয়ং উভয় ডিপার্টমেণ্টের প্রশ্ন প্রস্তুত করেন। কলেজের অধ্যাপকগণ প্রশ্ন দেখিয়া সন্তুষ্ট হইয়াছিলেন। পাঁচ দিবস পরীক্ষার স্থলে উপস্থিত থাকায়, প্রশ্ন প্রস্তুত করায় ও পরীক্ষার কাগজ দেখায়, তাঁহার যথেষ্ট পরিশ্রম হইয়াছিল; তজ্জন্য গবর্ণমেণ্ট হইতে উভয় পরীক্ষকই পুরস্কার প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। সিনিয়র ডিপার্টমেণ্টের পরীক্ষায় রামকমল ভট্টাচার্য্য, কাব্য ও অলঙ্কারের প্রশ্নের সর্বাপেক্ষা ভাল উত্তর লিখিয়াছিলেন; একারণ, অগ্রজ মহাশয় রামকমল ভট্টাচার্য্যকে ঐ