পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৮৯

তিনি বলিয়াছিলেন, “যদি শিক্ষাসমাজ আমাকে অধ্যক্ষপদে নিযুক্ত করেন, তাহা হইলে আপাততঃ এই পদ গ্রহণ করিতে পারি।” অনন্তর তিনি খৃঃ ১৮৫০ সালের ডিসেম্বর মাসে ৯০৲ টাকা বেতনে সংস্কৃত-কলেজে সাহিত্যশাস্ত্রের অধ্যাক্ষের পদে নিযুক্ত হইলেন। তাঁহার পরমবন্ধু বাবু রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়, তৎকালে জার্ডিন কোম্পানির হৌসে কেসিয়ারি পদে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়কে অনুরোধ করিয়া, রাজকৃষ্ণ বাবুকে ঐ কলেজের হেড্ রাইটারের পদে নিযুক্ত করাইয়া দেন। অগ্রজ মহাশয় কিছুদিন সাহিত্যশ্রেণীর অধ্যাপনার কার্য্য সম্পন্ন করিতেছেন, ইত্যবসরে বাবু রসময় দত্ত মহাশয় সংস্কৃত-কলেজের সেক্রেটারীর পদ পরিত্যাগ করিলেন। সেই সময়ে, কিরূপ ব্যবস্থা করিলে, সংস্কৃত-কলেজের উন্নতি হইতে পারে, তদ্বিষয়ের রিপোর্ট প্রদান করিবার জন্য আদেশ হইল। তদনুসারে অগ্রজ মহাশয় রিপোর্ট প্রদান করিলে, ঐ রিপোর্ট দর্শনে সন্তুষ্ট হইয়া, শিক্ষাসমাজ তাঁহাকে সংস্কৃত-কলেজের অধ্যাক্ষের পদে নিযুক্ত করিলেন। এতদিন সংস্কৃত-কলেজের অধ্যক্ষতা কর্ম্ম, সেক্রেটারি ও আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারি, এই দুই ব্যক্তি দ্বারা নির্ব্বাহিত হইয়া আসিতেছিল; এক্ষণে ঐ দুই পদ রহিত করিয়া, শিক্ষা-সমাজ অগ্রজকে ১৫০৲ টাকা বেতনে সংস্কৃত-কলেজের প্রিন্সিপালি পদে নিযুক্ত করিলেন। তখন তিনি কিরূপ বন্দোবস্ত করিলে কলেজের সম্যক্ উন্নতি হইবে, নিরন্তর এই চিন্তা করিতে লাগিলেন। তিনি, শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নকে সাহিত্য-শ্রেণীর অধ্যাপকের পদে নিযুক্ত করিলেন। তৎকালে সাহিত্যশ্রেণীর যে সকল পাঠ্যপুস্তক অবধারিত ছিল, তন্মধ্যে যে কয়েক প্রকারের পুস্তক দুষ্প্রাপ্য হইয়াছিল, তৎসমূহ পুনর্মুদ্রিত করাইয়া বিদ্যার্থিগণের বিশিষ্টরূপ সুবিধা করিয়া দিয়াছিলেন। ভরতমল্লিক, জয়মঙ্গল, নাথুরাম শাস্ত্রী ও প্রেমচন্দ্র তর্কবাগীশের টীকাসম্বলিত রঘুবংশ মুদ্রিত ছিল; কিন্তু উহার টিকাগুলি সর্ব্বাঙ্গসুন্দর না থাকায়, মল্লিনাথের টীকাসম্বলিত রঘুবংশ ও কুমারসম্ভব মুদ্রিত করিয়া সাধারণের বিশেষ উপকার করিয়াছিলেন। ইহার পূর্ব্বে