পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

কুমারসম্ভব মুদ্রিত হয় নাই; সুতরাং কলেজের ছাত্রগণ হস্তলিখিত পুস্তকদর্শনে অধ্যয়ন করিত। এইরূপ দর্শনশ্রেণীর বিদ্যার্থিগণের যে সকল পাঠ্যপুস্তক মুদ্রিত ছিল না, তৎসমুদয় ত্বরায় মুদ্রিত করাইয়া, ঐ অভাব মোচন করেন। ইহাতে কলেজের অধ্যাপক ও ছাত্রবর্গের এবং অন্যান্য টোলের ছাত্রবর্গেরও বিশেষ সুবিধা হইয়াছিল।

 প্রিন্সিপালের পদে নিযুক্ত হইবার ৬|৭ মাস পরে, অগ্রজ মহাশয় অত্যন্ত পীড়িত হন। কিছু সুস্থ হইবার পর শিরঃপীড়া ও দন্তরোগে আক্রান্ত হইয়া অতিশয় যন্ত্রণা ভোগ করেন; অনেক চেষ্টা করিয়া কিছু সুস্থ হন। কিন্তু শিরঃপীড়া হইতে একবারে নিষ্কৃতিলাভ করিতে পারেন নাই, বহু দিবস ব্যাপিয়া শিরঃপীড়ার সূত্র ছিল। প্রিন্সিপাল নিযুক্ত হইবার কয়েক মাস পরে, এক ভয়ানক দুর্ঘটনা উপস্থিত হইল। অগ্রজ মহাশয়ের প্রধান সহায় লেজিস্‌লেটিভ কৌন্সিলের মেম্বর ও শিক্ষাসমাজের প্রেসিডেণ্ট ভারতহিতৈষী, বিদ্যোৎসাহী, মহামতি বেথুন সাহেব মহোদয় কালগ্রাসে নিপতিত হইলেন।

 অগ্রজ মহাশয়, সংস্কৃত-কলেজের ও অন্যান্য কলেজের ভবিষ্যৎ উন্নতির জন্য এবং ভারতবর্ষের জেলায় জেলায় বিদ্যালয় স্থাপন জন্য বিদ্যোৎসাহী বেথুন সাহেবের ভবনে নিরন্তর গমন করিতেন। মহামতি ভারতহিতৈষী বেথুন সাহেব, ভারতবর্ষের অবলাগণের বিদ্যা-শিক্ষার জন্য সর্বপ্রথমে কলিকাতা মহানগরীতে বালিকাবিদ্যালয় স্থাপন করেন। প্রথমতঃ কলিকাতাস্থ হিন্দুদলপতিগণ স্ত্রীশিক্ষা-বিষয়ে নানাবিধ অমূলক আপত্তি উত্থাপন করেন; তথাপি বেথুন সাহেব ভগ্নোৎসাহ হন নাই। সর্ব্বাগ্রে কলিকাতা সুকিয়াষ্ট্রীটের বাবু দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের বৈঠকখানায় অভিনব বালিকাবিদ্যালয়ের কার্য্য় আরম্ভ হয়। সাহেব, প্রতিদিন বালিকাবিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধান করিতে আসিতেন; কিরূপে বিদ্যালয়ের উন্নতি হয়, সতত এই চিন্তায় মগ্ন থাকিতেন। কিছু দিন পরে, পটলডাঙ্গার গোলদিঘীর দক্ষিণপূর্ব্ব-কোণে, পূর্ব্বে যে গৃহে হেয়ার সাহেবের স্কুল ছিল, সেই বাটীতে ঐ বিদ্যালয়ের কার্য্য় নির্বাহ হইত। বালিকা-