পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারিদ্রে কঠোরতা।
৭১

পরিণামে তিনিই বলবস্তুর শূর এবং অধিকতর কর্ম্মঠ বলিয়া সমাজে প্রতিপন্ন হইবেন।”[১]

 বালক বিদ্যাসাগর রন্ধনাদি করিয়া ভ্রাতা ও পিতাকে মনের আনন্দে আহার করাইতেন এবং সতত আত্মপ্রসাদে প্রফুল্প থাকিতেন। যাঁহাকে আমাদের কঠোর কষ্ট বলিয়া মনে হয়, তাহা তাঁহার মনোমদ স্নিগ্ধ মুখকর,বলিয়াই মনে হইত। তিনি রন্ধনের ক্লেশকে ক্লেশ বলিয়া মনে করিতেন না; অধিকন্তু পাঠাভ্যাসে অবিরাম পরিশ্রম করিয়া ও কিছুমাত্র কষ্ট অনুভব করিতেন না। কষ্টের সীমা ছিল না। যে ঘরে তিনি রন্ধন করিতেন, সে ঘরটা অতি জঘন্য ছিল। একে তো ঘরটা বাড়ীর সর্ব্ব নিয়তলে, তাহার উপর জানালার অভাবে ভয়ানক অন্ধকারময়। নিকটে দুইটা পাইখানা ছিল; সুতরাং ঘরটা সদাই দুর্গন্ধে পূর্ণ থাকিত। মলমূত্রের কীটসকল কিলি-বিলি করিয়া ঘরের ভিতর ঢুকিত। ঈশ্বরচন্দ্র রন্ধন করিবার সময় ঘটাতে জল লইয়া বসিয়া থাকিতেন। পোকাগুলো ঘরের ভিতর ঢুকিলে তিনি জল দিয়া ধুইয়া দিতেন। এতদ্ব্যতীত ঘরময় প্রায় আরসুলা ঘুরিয়া বেড়াইত। সময়ে সময়ে উঠে ব্যঞ্জনে আরসুলা উড়িয়া পড়িত। হঠাৎ কোন দিবস ঈশ্বরচন্দ্র অজ্ঞাতে ব্যঞ্জনের সঙ্গে একটা আরসুলা রাঁধিয়া

  1. He who has battled, were it only with poverty and hard toil, will be found stronger and more expert than he who could stay at home from the battle, concealed among the provision waggons, or even rest unwatchfully, abiding by the stuff.