পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাঠ-সমাপ্তি।
৯১

শুনিয়াছি, তখন বৈকালের জলখাবার জন্য আধ পয়সার ছোলা আনিয়া ভিজান হইত এবং আধ পয়সার বাতাসা আসিত। ঐ ভিজা ছোলার অর্ধেক আবার রাত্রিকালে আলু-কুমড়ার ব্যঞ্জন প্রস্তুত হইত। প্রাতে রাত্রিতে কুমড়ার ডালনায় পোস্ত দিয়া ছোলার ব্যঞ্জন হইত। ঈশ্বরচন্দ্র দুই বেলা পাক করিতেন। ভাই দুইটার পাতে তরকারী দিবার সময় তিনি চক্ষের জল সংবরণ করিতে পারিতেন না। এই সময় আহারের যেমন কষ্ট, আবার থাকিবার কষ্ট ততোধিক হইয়াছিল। ঠাকুরদাস ঋণগ্রস্ত, ইহার উপর আশ্রয়দাতা সিংহ-পরিবারও ঋণগ্রস্ত। ঠাকুরদাস পুত্রগুলিকে লইয়া তে-তলায় শয়ন করিতেন; কিন্তু জগদদুর্লভ বাবু তে-তলাটী, এক জনকে ভাড়া দেন; কাজেই পুত্রগুলিকে লইয়া ঠাকুরদাসকে নিয়ে একটী ভদ্র লোকের বাসের অযোগ্য জঘন্য গৃহে বাসা করিতে হয়। কঠোর পরীক্ষা।

 ইহাতেও ঈশ্বরচন্দ্র অকুণ্ঠিত। তিনি এই সময় ন্যায়দৰ্শন-শ্রেণীতে প্রবিষ্ট হন। মহাপণ্ডিত নিমচাঁদ শিরোমণি মহাশয় ন্যায়শাস্ত্রের অধ্যাপক ছিলেন।[১] ন্যায়দর্শনের দ্বিতীয় বৎসরের পরীক্ষায় ঈশ্বরচন্দ্র সর্ব্বপ্রথম হইয়া ১০০ এক শত টাকা এবং কবিতারচনায় ১০০ এক শত টাকা পুরষ্কার পান। তিনি পাঁচ বৎসরে দর্শনশাস্ত্রের পাঠ সমাপ্ত করেন। আর কেহ ৮৷১০ আট দশ বৎসরে তাহা পরিতেন কি না সন্দেহ! প্রতিভা আর

  1. এই সময়ে এই নিমচাঁদ শিরোমণির মৃত্যু হওয়ার পর ঈশ্বরচত্রের চেষ্টায় পণ্ডিত জয়নারায়ণ তর্করত্ন তাঁহার পদে অধিষ্ঠিত হল। ইহা পাঠ্যব্যবস্থারও প্রতিপত্তিপরিচায়ক।