পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯২
বিদ্যাসাগর।

কাহাকে বলে? তদীয় ভ্রাতা শম্ভুচন্দ্র বলেন,—“যৎকালে তিনি দর্শন-শ্রেণীতে অধ্যয়ন করেন, তখন দেশে যাইলে অনেকের সহিত তাঁহার বিচার হইত। সকলেই তাঁহার সহিত বিচারে সন্তুষ্ট হইতেন। কুরাণ-গ্রামবাসী স্ববিখ্যাত দর্শনশাস্ত্রবেত্তা রামমোহন তর্কসিদ্ধান্তের সহিত তাঁহার প্রাচীন ন্যায় গ্রন্থের বিচার হয়। বিচারে তর্কসিদ্ধান্ত মহাশয়ের পরাজয় হয়। ইহা শুনিয়া পিতৃদেব তর্কসিদ্ধান্ত মহাশয়ের পদরজ লইয়া দাদার মন্তকে দেন।” এ বিষয়ের জন্য শম্ভুচন্দ্রের উপর নির্ভর করিতে হইল। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবনী-সম্বন্ধে যে সকল মহোদয়ের নিকট হইতে অন্যান্য সকল বিষয়ের নিগূঢ় তত্ত্ব আমরা পাইয়াছি, তাঁহাদের সকলকেই এ কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছি; কিন্তু সদুত্তর পাই নাই। কেহ কেহ তর্কচ্ছলে বলিতে পারেন,—অগ্রজ-সম্বন্ধে তখনকার অনেক কথা পণ্ডিত শম্ভুচন্দ্রের মনে থাকিবারই সম্ভাবনা; অথচ কথাটা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ন্যায় তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও প্রতিভাশালীর পক্ষে অসম্ভবও নয়। আমরা কিন্তু বিপরীত ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করিতে পারিয়াছি। দর্শনবিদ্যায় তাহার যে রীতিমত পারদর্শিতা জন্মে নাই ও তাঁহাতে যে তাঁহার তাদৃশ প্রবৃত্তিও ছিল না, তাহার গল্প, বিদ্যাসাগর মহাশয় অনেক সময়ে অনেকের নিকট করিতেন।

 ঈশ্বরচন্দ্র সংস্কৃত কলেজের শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়। কলেজের পাঠ সমাপন করিলে, কলেজ হইতেই “বিদ্যাসাগর”[১]

  1. বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ভ্রাতা শম্ভুচন্দ্রের মতে “১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের শেষে পাঠ্যাবস্থা শেষ করিয়া সংস্কৃত কলেজ পরিত্যাগ সময়ে উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ ও অধ্যাপকগণ অগ্রজ মহাশয়কে বিদ্যাসাগর উপাধি প্রদান করিল। ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দ নিশ্চিতই ভুল; কেননা, তিনি সংস্কৃত কলেজ পরিত্যাগ করিয়া, ১৮৪১ খৃষ্টাব্দে ফোর্টউইলিয়ম কলেজে প্রথম চাকুরি করেন।