পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
বিদ্যাসাগর।

উদ্যন্‌ বিজেতুমবনীং তব বিক্রমোহয়-
মস্মাকমস্তু কুশলায় নিরাশ্রয়াণম্॥ ১০

 এই নৈসর্গিক মধুরতায় আদিরসাত্মক কবিতা প্রাঞ্জলতাগুণে সকলেরই চিত্ত প্রীত করিবে যেন প্রাচীন কবির লিপিপটুতা পদে পদে প্রতিভাত।

 ১২৪৫ সালে বা ১৮৩৮ খৃষ্টাব্দে জন্‌ মিয়র্‌ নামে এক সিবি-লিয়ন্‌ সাহেবের প্রস্তাবে বিদ্যাসাগর মহাশয়, পুরাণ, সূর্য্যসিদ্ধান্ত ও যুরোপীয় মতের অনুযায়ী ভূগোল ও খগোল বিষয়ে এক শত শ্লোক রচনা করিয়া, এক শত টাকা পুরস্কার পাইয়াছিলেন। এই শ্লোকগুলি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবদ্দশায় পুস্তকাকারে মুদ্রিত হইতেছিল। তখন উহার মুদ্রা-কার্য্য সমাপ্ত হয় নাই। তাঁহার মৃত্যুর পর ১২৯৯ সালে ১৫ই বৈশাখে পুস্তক প্রকাশিত হইয়াছে।[১] ইহাতে এখন ৪০৮ টী শ্লোক দেখা যায়। সুতরাং মিয়র সাহেবের নির্দিষ্ট শত শ্লোক অপেক্ষা ইহাতে অতিরিক্ত শ্লোক রহিয়াছে। সেগুলি বোধ হয় পরে রচিত।

  1. ১, ২, ৩, ৪, ৯ ও ১০ রসময় বাবুর কথানুসারে রচিত। ৫, ৬, ৭, ও ৮ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ইচ্ছানুসারে রচিত।
     খগোল-ভূগোল রচনা-সংক্রান্ত পুস্তকের সুচনায় বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহার একটা সহাধ্যায়ীর দুর্ব্ব্যবহার সম্বন্ধে যাহা লিপি রাখেন, তাই একটু বিচিত্র। সেই জন্য তাহা এইখানে প্রকাশ করলাম,—"খগোল-ভূগোল সম্বন্ধে রচনা হইবার পূর্ব্বে মিয়্‌র সাহেবের পদার্থ বিদ্যা সম্বন্ধে রচনার বিষয় নির্ধারিত করিয়া এক শত টাকা পুরস্কার দিতে প্রতিশ্রুত হইয়াছিলেন। একশতটী শ্লোকে এই রচনা লিখিবার কথা ছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের একজন সহাধ্যায়ী আসিয়া তাঁহাকে বলেন,—“তুমি পঞ্চাশটা শ্লোক লিখিও এবং আমি পঞ্চাশটা লিখিব। পরে তোমার নামেই হউক, আর আমার নামেই হউক, এই রচনাটি কর্ত্ত্ররীপক্ষকে দেওয়া যাইবে।” সহাধ্যায়ীর বহু পীড়াপীড়িতে বিদ্যাসাগর মহাশয়