পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংস্কৃত রচনা।
১০৩

 এ পুস্তকের প্রারম্ভে ঈশ্বরচন্দ্রের আস্তিকতা, গুরুদেবপরায়ণতা বিনয়নম্রতার প্রমাণ রহিয়াছে।

অস্তিকতার প্রমাণ,—

যৎক্রীড়াভাণ্ডবদ্ভাতি ব্রহ্মাণ্ডমিদ্ভুতম্।
অসীমমহিমানং তং প্রণমামি মহেশ্বরম॥ ১।

বিনয়মম্রতা ও গুরুপরায়ণতার পরিচয়,—

“জগদ্বর্শন কর্ম্মেদং শর্ম্মণে কিমু মাদৃশ্যম্।
খদ্যোতানাং তমোনাশোদ্যমো হাস্যায় কন্য ন। ৪।
তথাপি শরণীকৃত্য[১] গুরূণাং চরণং পরম।
কিঞ্চিদ্বক্ষ্যামি সংক্ষেপাৎ সুধিয়ঃ শোধয়ন্তু তৎ। ৫।”

 এভাবের এমন প্রমাণ আর পরবর্তী গ্রন্থে পাই না। এইটী বুঝি কেবল অবিমিশ্র সংস্কৃত শিক্ষার ফল।

 খগোল-ভূগোল পুস্তকে যেরূপ বিভাগক্রমে দ্বীপ, বর্ষ, বর্ষখণ্ড এবং জনপদসমূহ বর্ণিত হইয়াছে, তাহাতে অনেক স্থলে পুরাণের অপেক্ষা পুরাণাংশ মুখপাঠ্য ও মুখবোধ্য।

 পুরাণমতে সাতটী পরিচ্ছেদে পৃথক পৃথক্ দ্বীপবর্ণন, অষ্টম পরিচ্ছেদে দ্বীপাতিরিক্ত সত্ত্বযুত ভূমিভাগ, কাঞ্চনভূমি, লোকলোক পর্ব্বত এবং ভূমণ্ডলের পরিমাণ আর নবম পরিচ্ছেদে খগোল বৃত্তান্ত বর্ণিত হইয়াছে। খগোল বৃত্তান্তে রাশিচক্র, গ্রন্থ-সংস্থান


    সম্মত হন। রচনা কর্ত্তৃপক্ষকে দিবার কিয়দ্দিন পূর্ব্বেই সেই সহয়্যাধায়ীটী আসিয়া বলেন যে, আমি শ্লোকগুলি লিখিতে পারি নাই। ইহা শুনিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় বলেন—” তবে আমার লেখা এই শ্লোকগুলি আর কি হইবে?” এই বলিয়া তিনি সেই স্বরচিত শ্লোকগুলি তৎক্ষনাৎ ছিঁড়িয়া ফেলিলেন। পরে তিনি তাঁহার সহধ্যায়ীটী ১০০ একশত শ্লোকই রচনা করিয়া আনিয়া কর্তৃপক্ষকে দেখান এবং পুরস্কার পান।

  1. ত্ব শরণীকৃত্য অদ্ভূততদ্ভাবে চ্বি। চিরন্তনীয়।