পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সিবিলিয়ান-পরীক্ষা।
১১৫

তখন সেইখানেই ছিল। সিবিলিয়ানগণ এই “রাইটার্স বিল্ডিং” এ বাস করিতেন। এখানে সিবিলিয়ান সাহেবদের নাচ, ভোজ, আমোদ-প্রমোদ যথারীতি সম্পন্ন হইত। বাড়ীর মধ্যস্থলে “ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজ” ও তাহার “অফিস” ছিল। আফিসে পণ্ডিত ও মৌলবী ব্যতীত, “হেড রাইটার” বা “কেসিয়ার” এবং তদধীন দুই তিনটী কেরাণী কার্য্য করিতেন।

 ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ সিবিলিয়ানদের আশ্রয়-স্থল ছিল, এ জন্য ইহা সাহেবসম্প্রদায়ের নিশ্চিতই চির-স্মরণীয়; কিন্তু ইহা অপর বিশেষ কারণেও বাঙ্গালীর হৃদয়ে চির-জাগরূক থাকিবে। এই ফোর্টউইলিয়ম্‌ কলেজ, বিদ্যাসাগরের ইহ-যুগসম্মত ভবিষ্যৎ সৌভাগ্য গৌরবের সুত্রপাত হয়। ইহার পরিচয় পাঠক পরবর্তী, ঘটনাবলীতে প্রাপ্ত হইবেন; কিন্তু ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের চির-স্মরণ-যোগ্যতার জন্য গুরুতর কারণ আছে। ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজ বাঙ্গালী গদ্য-সাহিত্যের পুষ্টি-কল্পে অন্যতম শক্তিশালী সহায়। বাঙ্গালা গদ্য-সাহিত্যের সৃষ্টিকাল নির্ণয় করা বড় দুরূহ। কেহ বলেন, শ্রীচৈতন্যদেবের সময় ইহার সৃষ্টি। তিনি যে কৃষ্ণবালা করিয়াছিলেন, তাহা গদ্য-সাহিত্য-স্থষ্টি-কল্পে প্রধান সপ্তম। কেহ বলেন, তাহা নয়; তাহার পরবর্তী কালে ইহার স্পষ্ট। চৈতন্যমঙ্গল ন হইবার পূর্ব্বে যে “গৌর-চন্দ্রিকা” কীর্ত্তন হইত, তাহা গদ্যে লিখিত ছিল। সেই গদ্যে বাঙ্গালা-গদ্যসাহিত্যর স্রোতস্বতীর উৎপত্তি-স্থান। আমরা কিন্তু তিন চারি শত বৎসরের পূর্ব্বে লিখিত একখানি বাঙ্গালা গদ্য পুঁঁথি দেখিয়াছি। যাহা হউক, তাহ লইয়া এক্ষণে বিচার করিবার প্রয়োজন নাই। ১৮০০ খৃষ্টাব্দের গদ্য-সাহিত্যের অস্তিত্ব সত্ত্বেও উহা