পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইংরেজি শিক্ষা।
১১৯

সহায়তায় ও চিকিৎসায় অনেক আর্ত্ত-পীড়িতের কৃষ্ট নিবারণ করিতে সমর্থ হইতেন। নীলমাধব বাবুর নিকট কিছুদিন ইংরেজী শিখিয়া বিদ্যাসাগর হিন্দুকলেজের অন্যতন ছাত্র রাজনারায়ণ গুপ্তের নিকট রীতিমত ইংরেজি শিক্ষা করেন।[১] ইরেজী অঙ্ক শিখিবার জন্যও বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রায়ই শোভাবাজার-রাজবাটীতে স্বৰ্গীয় অনিন্দকৃষ্ণ বসু, অমৃতলাল মিত্র এবং স্বগীয় শ্রীনাথ ঘোষের নিকট যাইতেন।[২] অঙ্ক শিখিবার জন্য তাঁহার যথেষ্ট চেষ্টা ছিল; কিন্তু বিষয়টা তাঁহার তত প্রীতিপদ হয় নাই; অথচ ইহাতে অনেকটা সময় অনর্থক অতিবাহিত হইত; তদুপরি বিষয়টা তাহার নীরস বলিয়া বিবেচিত হইত; অগত্য তিনি তাহা হইতে বিরত হন।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় অঙ্কবিদ্যা-চর্চা পরিত্যাগ করিয়া স্বাভাবিক প্রবৃত্তি-মার্গ অবলম্বন করিয়াছিলেন। ইহার চরম ফল,— আত্মোৎকর্ষ। আধুনিক বিশ্ববিদ্যালযের বিমিশ্র শিক্ষাপ্রণালীতে অনেকের আত্মোৎকর্ষে ব্যাঘাত ঘটিয়া থাকে। ইংলণ্ডের কোন কোন কর্তৃপক্ষ এ কথা স্বীকার করিয়াছেন। আধুনিক বিমিশ্র

  1. রাজনারায়ণ গুপ্ত মহাশয় বিদ্যাসাগর মহাশযেব নিকট মাসিক ১৫ টাকা বেতন পাইতেন। যিনি বলেন, তাঁহার কথা নির্ব্বিবাদ নয, কেননা রাজকৃষ্ণ বাবুর মুখে শুনিয়াছি, তিনি প্রত্যহ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাসায় আহার করিয়া কলেজে পড়িতে যাইতেন এবং মাসে মাসে যৎকিঞ্চিত পারিশ্রমিক স্বরূপ পাইতেন।
  2. অমৃতলাল বাবু শোভাবাজারের রাজা রাধাকান্ত বাহাদুরের মধ্যস্থ জামাতা, শ্রীনাথ বাবু কনিষ্ঠ জামাত এবং আনন্দকৃষ্ণ বাবু দৌহিত্র। আনন্দ বাবুর জননী রাজা বাহাদুরের জ্যেষ্ঠ কন্যা ছিলেন। ইঁহাদের সকলের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পরম বন্ধুত্ব ছিল। ইঁহারা হিন্দু কলেজে পড়িয়া ইংরেজিতে সুপণ্ডিত হইয়াছিলেন।