পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৪
বিদ্যাসাগর।

 এই সময় সংস্কৃত কলেজে “জুনিয়র্” ও “সিনিয়র্” পরীক্ষা প্রচলিত ছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয়, রাজকৃষ্ণ বাবুকে “জুনিয়ার্” পরীক্ষা দিবার জন্য প্রস্তুত হইতে বলেন। রাজকৃষ্ণ বাৰুও সম্মত হন; কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয় এক দিন সংস্কৃত কলেজে গিয়া শুনেন, একটা ব্রাহ্মণপত্তিত ৮ আটটা টাকা “জুনিয়র্” বৃত্তি পাইতেছেন। ব্রাহ্মণের সেই আটটী টাকায় লেখাপড়া এবং আহারাদি সবই নির্ভর করিত। এ সংবাদ পাইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় ভাবিয়াছিলেন,—“রাজকৃষ্ণের জুনিয়র পরীক্ষা দেওয়া হইবে না; রাজকৃষ্ণ যদি পরীক্ষায় বৃত্তি পায়,তাহা হইলে ব্রাহ্মণের বৃত্তি-রোধ হইবে।” স্বভাবতঃ পরদুঃখকাতর বিদ্যাসাগর ব্রাহ্মণের অবস্থা ভাবিতে ভাৰিতে বড় কাতর হইয়া পড়েন। তিনি বাসায় ফিরিয়া আসেন এবং রাজকৃষ্ণ বাবুকে সকল কথা প্রকাশ করিয়া বলেন। রাজকৃষ্ণ বাবু “জুনিয়র্” পরীক্ষা দিবার কামনা পরিত্যাগ করেন। ইহা গুরু-শিষ্যের সহৃদয়তার পরিচায়ক নহে কি? করুণা-স্রোতে উভয়ের বলবতী বাসনা ভাসিয়া গেল। অতঃপর বিদ্যাসাগর মহাশয় রাজকৃষ্ণ বাবুকে “সিনিয়র্” পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হইতে বলেন। “সিনিয়র” পরীক্ষা দিবার প্রস্তাৰ শুনিয়া রাজকৃষ্ণ বাবু বলেন,—“আমি কি পারিব?” বিদ্যাসাগর মহাশয় বলেন,—“কেন পরিবে না? তবে একটু বেশী পরিশ্রম করিতে হইবে। তুমি যদি প্রত্যহ আহারাদি করিয়া বেলা ৯ টার সময় আমার সহিত ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজে যাইতে পার, তাহা হইলে আমি তোমায় পড়াইতে পারি” রাজকৃষ্ণ বাবুসন্মত হন।

 প্রত্যহ ৯ নয় টার সময় আহারাদি করিয়া রাজকৃষ্ণ বাবু