পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
বিদ্যাসাগর।

হয় না অতএব তাঁহার নিকটে থাকা অত্যাবশ্যক। সুতরাং অদ্য যাইতে পারিলাম না ত্রুটিমার্জ্জনে আজ্ঞা হয়। কিমধিকমিতি

২৮ নবেম্বর ১৮৪৩
আজ্ঞাবর্ত্তিনঃ
শ্রীঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মণঃ।

 এ পত্রের শিরোভাগে “শ্রীশ্রীদুৰ্গা শরণং” লেখা আছে। ইহা বিশ্বাস, কি অভ্যাসের ফল, ঠিক করিয়া তাহা বলিবার উপায় নাই। তবে তখনকার পক্ষে বিশ্বাসের ফল বলিয়া একেবারে অবিশ্বাস করাও যাইতে পারে না। তখনও ত তিনি অবিমিশ্র সংস্কৃত শিক্ষারই ফলভোগী ছিলেন। তবে ইহার পরবর্ত্তী কালে যখন তিনি ইংরেজী-বিদ্যায় বুৎপন্ন হইয়া ইংরেজী-ভাষাদৰ্শিত শিক্ষা-প্রণালীর পূর্ণমাত্রায় পোষকতা করিতেছিলেন, যখন হিন্দুচিত ক্রিয়ানুষ্ঠানে বিরত ছিলেন, তাঁহার কোন কোন চিঠিপত্রের শিরোনামেও “শ্রীদুৰ্গা শরণং” বা “শ্রীশ্রীহরি: সহায়ঃ” দেখা যায়। কোন সময়ে তিনি একবার সুকিয়াষ্ট্রীট নিবাসী ডাক্তার চন্দ্রমোহন ঘোধের বাড়ীতে বসিয়া পাইকপাড়ার রাজবাটীতে এক পত্র লিথিয়াছিলেন। পত্র লেখা হইলে পর চন্দ্রমোহন বাবু একবার পত্র খানি দেখিতে চাহিলেন। ইহাতে বিদ্যাসাগর মহাশয় হাস্য করিয়া বলিলেন,—“তুমি যাহা ভাবিতেছ, তাহা নহে; এই দেখ, 'শ্রীশ্রীহরিঃ সহায়ঃ লিখিয়াছি।” ইহাতে মনে হয়, তিনি ষে কারণে চটি জুতা পায়ে দিতেন, থান-ধুতি, মোট চাদর পরিতেন, ভট্টাচার্য্যের মতন মাথা কামাইতেন, সেই কারণেই পত্রের শিরোভাগে ঐরুপ লিখিতেন। ইহাকে হয় তো তিনি বাঙ্গালীর জাতীয়ত্বের একটা অঙ্গ মনে করিতেন।