বাঙ্গালা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। চারি বৎসরের মধ্যে এইরূপ একশত একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। এই সব বিদ্যালয়ের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সম্পর্ক ছিল। এই সকল বিদ্যালয় বাঙ্গালা ভাষার প্রসার-প্রবর্ত্তনের জন্য সৃষ্ট হয়; পরস্তু বাঙ্গালা পাঠ্যে বিজাতীয় ভাব-প্রণোদনের সম্পূর্ণ সহায় হইয়াছিল। সেইজন্য এই সমস্ত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা-কথাটা এইখানে বলিয়া রাথিলাম।
ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজের কার্য্যকালে একদিন পথে পিতা ঠাকুরদাসের কি একটা দুর্ঘটনা উপস্থিত হয়। কাহারও কাহারও মুখে শুনি, অশ্বের পদাঘাতে তিনি আহত হন; কিন্তু এ কথার সত্যতা সম্বন্ধে কেহই দায়িত্ব গ্রহণে সম্মত নহেন। যাহা হউক, এই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় পিতাকে কর্ম্ম পরিত্যাগ করিতে পরামর্শ দেন। তিনি বলেন,—“বাবা! এখন তো আমি মাসে ৫০৲ পঞ্চাশ টাকা পাইতেছি, স্বচ্ছন্দে সংসার চলিবে, আপনি আর কেন পরিশ্রম করেন? আপনি দেশে গিয়া থাকুন।”
বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিতান্ত অনুরোধে পিতা ঠাকুরদাস কর্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া দেশে যাইয়া বিশ্রাম করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহাকে মাসে মাসে ২০৲ কুড়ি টাকা পাঠাইয়া দিতেন এবং নিজের বাসায় ৩০৲ ত্রিশ টকা খরচ করিতেন। এই সময় বাসায় তাঁহার দুই সহোদর, দুই জন পিতৃব্যপুত্র,দুই জন পিসতুতো ভাই, এক জন মাসতুতে ভাই এবং অনুগত ভূত্য স্ত্রীরাম নাপিত, এই কয়জনের অবস্থিতি হইত।[১]এতদ্ব্যতীত দুই চারি জন
- ↑ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পুত্র শ্রীযুক্ত নারায়ণচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের