পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্য বন্ধন।
১৬৩

তাঁহারাও কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ন্যায়, বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জল বাঙ্গালা ভাষার পুস্তক প্রণয়নে সমর্থ হন নাই। তুলনায় সমালোচনা করিবার জন্য, তাঁহাদেরও প্রত্যেকের ভাষার একটু একটু নমুনা প্রকাশ করিলাম।

 রাজা রামমোহন রায় “পৌত্তলিকদিগের ধর্ম্ম প্রণালী,” “বেদান্তের অনুবাদ” “কঠোপনিষদ্” “বাজসনের-সংহিতোপনিষদ, “মাণ্ডুক্যোপনিষদ্” “পথ্যপ্রদান” প্রভৃতি কয়েকখানি পুস্তক রচনা করিয়াছিলেন। “পথ্য প্রদান” হইতে ভাষার একটু নমুনা দিলাম,—

 বাস্তবিক ধর্ম্মসংহারক অথচ ধর্ম্মসংস্থাপনাকারী নাম গ্রহণপুর্ব্বক যে প্রত্যুত্তর প্রকাশ করিয়াছেন, তাহা সমুদায়ে দুই শত অষ্টাত্রিংশৎ পৃষ্ঠ সংখ্যক হয়, তাহাতে দশ পৃষ্ঠ পরিমিত ভূমিকা গ্রন্থারম্ভে লিখেন। এই দশ পৃষ্ঠে গণনা করা গেল যে, ব্যঙ্গ ও নিন্দাসূচক শব্দ ভিন্ন স্পষ্ট কদুক্তি বিংশতি শব্দ হইতে অধিক আমাদের প্রতি উল্লেখ করিয়াছেন—এইরূপ সমগ্র পুস্তক প্রায় দুর্ব্বাক্যে পরিপুষ্ট হয়। ইহাতে এই উপলব্ধি হইতে পারে যে,

    ইংরেজীতে পারদর্শিতা লাভ করিয়াছিলেন, কিন্তু কৃষ্ণ বন্দ্য খৃষ্টান হইয়াছিলেন। ইঁহাদের বাঙ্গালা ভাষার হিতৈষণ প্রকৃতই প্রশংসার যোগ্য। ১৮৯৭ খৃষ্টাব্দে ৭০ বৎসর বয়সে রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও ১৮৮৪ খৃষ্টাব্দের ৮৫ বৎসর বসে কৃষ্ণ বন্দ্য মানবলীলা সংবরণ করেন। রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্রের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের এক সময় অনেকটা ঘনিষ্ঠতা ছিল। “ওয়ার্ডস ইনষ্টিটিউশনের” কোন কার্য্যালোচনার পর উভয়ের সে ঘনিষ্ঠতা বিচ্ছিন্ন হয়। কৃষ্ণ বন্দ্যর সহিত মৌখিক আলাপ প্রীতিময় ছিল।