পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে-সন্ধান।
১৬৭

চরিত রচিত হইবার পূর্ব্বে অন্যান্য অনেক মহাত্মা বাঙ্গালা গদ্য- সাহিত্যের পুষ্টি-সাধন জন্য পুস্তক রচনা করিয়াছেন। এ জন্য কেরি, মার্সমান্ প্রভৃতি মিশনরী বাঙ্গালীর আশীর্ব্বাদপত্র। তবে ইঁহারও যে ভাষার সম্যক্ পরপাটীকরণে বা পরিপুষ্টিসাধনে কৃতকার্য্য হন নাই, বাঙ্গালী পাঠকমাত্রেই তাহা বিদিত আছেন। মিশনরী ভাষার একটু নমুনা এইখানে দিলাম,—

 “এক বড় বিলেতে অনেক বেঙ্গের বসতি ছিল। তাহার ধারে কতকগুলি বালক হঠাৎ খাপরা খেলা খেলিতে লাগিল; আর জলে একজাই খাপরা বৃষ্টি করিতে লাগিল; ইহাতে ক্ষীণ ও ভীত বেঙ্গেদের বড় দুঃখ হইল। শেষে সকল হইতে সাহসী এক বেঙ্গ বিল হইতে উপরে মুখ বাড়াইয়া কহিল, হে প্রিয় বালকেরা! তোমরা এত ত্বরাতেই কেন আপন জাতির নিষ্ঠুর স্বভাব শিক্ষহ?”

 যে অংশ উদ্ধৃত হইল, তাহাতে বুঝা যায়, ভাষা অনেকটা সরল বটে; কিন্তু ইংরেজীর ভাব-ভাঙ্গা; আর গঠন-প্রণালী ইংরেজীরই অনুকৃতি। বিজাতীয় লেখকদিগের নিকট ইহা অপেক্ষা অধিক আশা করা যায় না।

 কেরি, মার্সমান প্রভৃতি মিশনরী ভিন্ন অনেক সিবিলিয়ান্ সাহেব ও বাঙ্গালী মনস্বী, সংবাদপত্র এবং পুস্তকাদি প্রকাশ করিয়া বাঙ্গালা ভাষার পুষ্টি-সাধনের যথেষ্ট পরিচয় দিয়াছেন।[১]

  1. ১৭৭৮ খৃষ্টাব্দে হালহেড নামক এক সিবিলিয়ান্ সাহেব বঙ্গভাষায় এক ব্যাকরণ প্রকাশ করেন। তখন মুদ্রাযন্ত্র ছিল না। চার্লস্ উইলকিনস্ নামক হালহেড সাহেবের এক বন্ধু স্বহস্তে ক্ষুদিয়া ঢালিয়া এক সাট বাঙ্গালা অক্ষর প্রস্তুত করেন। এই অক্ষরে হালহেড সাহেবের ব্যাকরণ মুদ্রিত হয়। ১৮৯৩