পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮২
বিদ্যাসাগর

 পরে মুরশিদাবাদ রাজপরিবার এবং স্বয়ং মহারাণী স্বর্ণময়ীর সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের এতাদৃশ ঘনিষ্ঠতা হইয়াছিল যে, বিদ্যাসাগর মহাশয় আবশ্যক হইলে, মহারাণীর নিকট অর্থ ঋণ লইতেও কুণ্ঠিত হইতেন না। বিদ্যাসাগর মহাশয় রাজ-পরিবারের কর্ম্মচারিগণকে যেরূপ নানা বিষয়ে সাহায্য করিতেন, মহারাণীর নিকটও তিনি সেইরূপ অনেক বিষয়ে সাহায্য পাইতেন। এ সম্বন্ধে চিঠি-পত্রাদি যথাপ্রসঙ্গে স্থানান্তরে প্রকাশিত হইবে।

 ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের মার্চ্চ মাসে বিদ্যাসাগর মহাশয় ফোর্ট-উইলিয়ম্ কলেজের কার্য্য পরিত্যাগ করেন। এই সময় সংস্কৃত কলেজের আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারী রামমাণিক্য বিদ্যালঙ্কার মহাশয়ের মৃত্যু হয়। বাবু রসময় দত্ত তখন সংস্কৃত কলেজের সেক্রেটারী ছিলেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের একজন সবিশেষ গুণগ্রাহী ছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারীর পদ গ্রহণ করিলে সংস্কৃত কলেজের প্রকৃতই অনেক উন্নতি হইবে, ইহাই তাঁহার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। তবে এ পদের বেতন পঞ্চাশ টাকা ছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজেও পঞ্চাশ টাকা বেতন পাইতেন; সুতরাং এ পদের জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয় যে ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজের পদ ত্যাগ করিবেন না, রসময় বাবুর ইহাও ধারণা হইয়াছিল; কিন্তু তাঁহার ঐকান্তিক ইচ্ছা, বিদ্যাসাগর মহাশয় এই পদ গ্রহণ করেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়কে এই পদে অধিষ্ঠিত করিবার দৃঢ় সংকল্প করিয়া, ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের ২৮শে মার্চ্চ শিক্ষা-বিভাগে এক পত্র লেখেন। এই পত্রে বিদ্যাসাগর মহাশয়কে আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারী করিবার জন্য তাঁহার সবিনয় অনুরোধ ছিল। এই পদের বেতন বৃদ্ধি করিয়া