পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইংরেজি শিক্ষার উন্নতি।
১৯৯

করিয়াছেন, এই ইতিহাসেও সেই কৃতিত্বের পরিচয় পাই। ইংরেজি হইতে হউক, হিন্দী হইতে হউক, আর সংস্কৃত হইতে হউক, অনুবাদ-কৃতিত্বে বিদ্যাসাগর অতুলনীয়। তবে ইতিহাসে অনুবাদের কৃতিত্ব প্রমাণ যেরূপ, গবেষণা ও প্রকৃত তথ্যনির্ণয়ের কৃতিত্বপ্রমাণ সেরূপ নহে। মার্শমান্ সাহেব, সিরাজুদ্দৌলাকে যেরূপ নিষ্ঠুর, নৃশংস ও অরাজনীতিজ্ঞ বলিয়া প্রমাণ করিবার প্রয়াস পাইয়াছেন, গবেষণাকলে তাহার বিপরীত প্রমাণ করা যাইতে পারে। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের লাইব্রেরীতে যে সব ইতিহাস সংগ্রহ দেখিতে পাই, একটু মনোযোগ সহকারে তাহার আলোচনা করিলে, সিরাজুদ্দৌলার চরিত্রের তাহাতেই বিপরীত প্রমাণ হইতে পারে। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের লাইব্রেরীতে সংগৃহীত ইতিহাসসমূহের সাহায্যে, আমি জন্মভূমিতে সিরাজুদ্দৌলার চরিত্রের কলঙ্ক-প্রক্ষালনে প্রয়াস পাইয়াছিলাম। মনে হয়, তাহাতে কতকটা কৃতকার্য্য হইয়াছি। এই সব ইতিহাসের পর্যালোচনায়, অন্ধকুপের অস্তিত্ব-সম্বন্ধেও সন্দেহ উপস্থিত হইয়ছে।[১] ভারতবর্ষের প্রকৃত ইতিহাস লিখিবেন বলিয়াই, বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রাচীনতম ও অধুনাতম ইতিহাস গ্রন্থসমূহ সংগ্রহ করিয়াছিলেন; কিন্তু দুঃখের বিষয়, তিনি মনষ্কামনা সিদ্ধ করিতে পারেন নাই। মনষ্কমনা সিদ্ধ হইল না বলিয়া, এক দিন আলমারিবদ্ধ এই সমুদয় ইতিহাস পুস্তক দেখিতে দেখিতে অকিরল-ধারায় অশ্রু বর্ষণ করিয়াছিলেন।

 ১২৫৬ সালে বা ১৮৪৯ খৃষ্টাব্দের মার্চ মাসে ফোর্ট উইলিয়ম্

  1. ইহার বিশেষ বিবরণ আমার রচিত “ইংরেজের জয়” নামক গ্রন্থে স্রষ্টব্য।