পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪০
বিদ্যাসাগর।

সকলকে বলিলেন,—“ঠিক বলেছিস্, আমার কঠোর প্রাণ বটে, অন্যমনস্কে তোদিগে একটু জল খেতেও বলি নাই; আয় আয় একটু একটু জল খেয়ে যা।” ছাত্রগণ তখন অপ্রস্তুত হইল। কেহ কেহ হাত ষোড় করিয়া ক্ষমা চাহিল; কেহ কেহ বা তাড়াতাড়ি পলাইবার চেষ্টা করিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় বাড়ীর দরজা বন্ধ করিয়া দিতে বলিলেন। পরে তিনি সকলকে ধরিয়া উপরে লইয়া গেলেন। উপরে গিয়া সকলকে জল থাইতে হইল। তখন তাঁহার সেই প্রফুল্ল প্রসন্ন বদনখানি দেখিয়া একজন অন্য জনকে বলিয়াছিল;— “এ লোকের রাগ হয় কেমন করিয়া?”

 বিদ্যাসাগর মহাশয় ছাত্রদিগের কায়িক দণ্ড-বিধানের একান্ত বিরোধী ছিলেন। এক দিন তিনি দেখিতে পান, সংস্কৃত কলেজের কোন অধ্যাপক, ক্লাসের ছেলেগুলিকে দাঁড় করাইয়া রাখিয়াছেন, তিনি তৎক্ষণাৎ অধ্যাপককে অন্তরালে ডাকিয়া লইয়া গিয়া, একটু রহস্য করিয়া বলিলেন,—“কি হে তুমি যাত্রার দল করিয়াছ নাকি, তাই ছোকরাদিগকে তালিম দিতেছ? তুমি বুঝি দূতী সাজিবে?”

 অধ্যাপক একটু অপ্রতিভ হইয়াছিলেন।

 আর একদিন বিদ্যাসাগর মহাশয় এই অধ্যাপকের টেবিলে একগাছি বেত দেখিয়া অধ্যাপককে জিজ্ঞস করেন,—“বেত কেন হে?” অধাপক মহাশয় বলেন,—“মানচিত্র দেখাইবার সুবিধা হয়।” বিদ্যাসাগর মহাশয় বলেন—“রথ দেথা, কলা বেচা! দুই হয়। ম্যাপ দেখানও হয়, ছেলেদের পিঠেও পড়ে।”

 বলা বাহুল্য এই অধ্যাপক মহাশয়ের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রায়ই রহস্যালাপ হইত। বিদ্যাসাগর মহাশয় চিরকালই