পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৪
বিদ্যাসাগর।

দিতেন এবং স্বয়ং পদব্রজে চলিয়া যাইতেন; পরে কোন চটি পাইলে, পীড়িত ব্যক্তিকে সেই চটিতে রাখিয়া, চটির কর্ত্তাকে টাকা কড়ি দিতেন। পরিভ্রমণকালে তিনি সঙ্গে টাকা, আধুলি, সিকি প্রভৃতি রাখিয়া দিতেন; দরিদ্র লোককে অবস্থানুসারে তাহা দান করিতেন। দয়ার সীমা নাই। অভাব জানাইয়া কেহ কথন বিমুখ হইত না। কত অভিভাবকহীন বালককে যে তিনি পুস্তক, বস্ত্র, বেতন প্রভৃতি দান করিয়াছিলেন, তাহার কি গণনা হয়? কোথাও গিয়া যদি শুনিতেন, অন্নাভাবে বা অর্থাভাবে কাহারও লেখাপড়া হইতেছে না, তাহা হইলে তিনি তখনই তাহাকে আপনার বাসায় আনাইয়া অথবা অন্য কোন রকম বন্দোবস্ত করিয়া, তাহার লেখাপড়া শিখাইবার ব্যবস্থা করিয়া দিতেন। শুনিয়াছি, একবার পরিদর্শনকালে ২৪ চব্বিশ পরগণার অন্তর্গত নিবাধই-দত্তপুকুরনিবাসী কালীকৃষ্ণ দত্তের বাড়ীতে গিয়াছিলেন। সেই সময়ে একটা দীন-হীন অনাথ ব্রাহ্মণ-সস্তান তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত হইয়া কাতর-কণ্ঠে ক্রন্দন করিতে করিতে আপনার অভাব ও দুঃখের কথা নিবেদন করে। তাহার অবস্থার কথা শুনিয়া, বিদ্যাসাগর মহাশয় বালকের ন্যায় ক্রন্দন করিয়াছিলেন। তিনি পরে সেই ব্রাহ্মণসন্তানকে আপনার বাসায় আনাইয়া তাহার লেখা-পড়া শিক্ষার ব্যবস্থা করিয়া দেন। এইরূপ কত জনের অন্নসংস্থান ও অভাব মোচন হুইয়াছে, তাহা কত বলিব? কলিকাতার বাসায় এবং বীরসিংহগ্রামের বাড়ীতে প্রত্যহু শতাবধি লোক অন্ন পাইত। অনেকের লেখা-পড়া শিখিবার ব্যয়ভার তিনি বহন করিতেন।

 কেহ বিদ্যাসাগরের নিকট ... করিতে যাইয়া, প্রায় রিক্ত-