পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭২
বিদ্যাসাগর।

অনেক দুঃস্থ ও নিঃস্ব ব্যক্তির মাসহরা বন্দোবস্ত করিয়া দিয়াছিলেন। রাঞ্জকৃষ্ণ বাবুর মুখে শুনিয়াছি, বিদ্যাসাগর ও তৎপিতার আশ্রয়দাতা জগদ্‌দুর্লভ সিংহের মৃত্যুর পর সিংহপরিবারের শোচনীয় অবস্থা উপস্থিত হইয়াছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় তৎপুত্র ভূবনমোহন সিংহের ত্রিশ টাকা মাসহরা বন্দোবস্ত করিয়া দেন। ভুবন সিংহের জামাতার প্রতি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের যথেষ্ট অনুগ্রহ ছিল। জামাতা প্রায়ই বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট আসিয়া সাহায্য গ্রহণ করিতেন। এই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় শ্যামাচরণ ঘোষাল নামক এক আত্মীয়ের ১০৲ টাকা মাসহারার বন্দোবস্ত করিয়া দেন। মাসহারার বন্দোবস্ত অনেকেরই ছিল। মাসহারা ব্যতীত অনেকে অন্য প্রকারে সাহায্য পাইত। সকল জানিবার উপায় নাই। কেননা, পাছে লজ্জা পায় বলিয়া অনেককেই তিনি গোপনে গোপনে সাহায্য করিতেন। নারায়ণ বাবু বলেন,— “বাবা অনেককে সাহায্য করিতেন বটে; দেখিতাম, অনেকেই তাঁহার নিকট সাহায্য লইতে আসিতেন; কিন্তু তাঁহাদের অনেকের নামধাম জানিতাম না; এমস কি, অনেক দানের কথা খাতায় খরচ পর্যন্ত লেখা হইত না; তবে যাঁহাদের মাসিক বন্দোবস্ত ছিল, তাঁহাদের নাম পাওয়া যায়।”

 বিদ্যাসাগর মহাশয় যখন সংস্কৃত কলেজে প্রিন্সিপাল-পদে প্রতিষ্ঠিত হন, তখন কলেজে ইংরেজি পড়িবার ব্যবস্থা ছিল বটে; কিন্তু তাহার তাদৃশ প্রদুর্ভাব ছিল না। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের যত্নে ও চেষ্টায় তাহার প্রাদুর্ভাব হয়। নিয়ম হইল, সংস্কৃত পরীক্ষার যেরূপ নম্বর রাখিতে হয়, ইংরেজিতে সেরূপ,নম্বর রাখিতে হইবে। কাজেই, তখন ছাত্রগণ ইংরেজি-শিক্ষায় পূর্ব্বাপেক্ষা