পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যাসাগর।

অনেকের অনেক কথা বলিতে তিনি কুণ্ঠিত হইয়াছিলেন। তাঁহার কথা এই ছিল,—

 “Walking ashes under which the fire was not extinguished.”

“অনলাভ্যন্তর ভষ্মস্তূপে বিচরণ করিতেছি।”

 সকল দোষত্রুটির সমালোচনা করা অসম্ভব হইলেও, আমরা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কোন কোন কার্য্যের জনমত কিরূপ ছিল, তাহা প্রকাশ করিতে সাহসী হইয়াছি। যাহার অনুকরণে সম্প্রদায়বিশেষের মহতী ক্ষতি হইয়াছে বলিয়া অনেকে দৃঢ় মত পোষণ করেন, তাহা প্রদর্শন না করিলে প্রত্যবায়ভাগী হইতে ইহবে। গুণরাশির সমালোচনা ত অবশ্য কর্ত্তব্য; যেহেতু তাহা একান্ত অণুকরণীয়। বিদ্যাসাগর মহাশয় দরিদ্র ব্রাহ্মণের সন্তান হইয়াও, কি গুণে সম্রাট-মুকুট-লাঞ্ছন কীর্ত্তির অপুর্ব্ব জ্যোতিমন শিরস্ত্রাণ মস্তকে ধারণ করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন, তাহা বর্তমান কালে অনেকে অবগত নহেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবনী সমালোচনায় তাহা উদঘাটিত হইবে, সেই হেতু এ জীবনী বোধ হয় বর্তমান ও ভবিষ্যৎ লোকসমূহের কথঞ্চিৎ উপকারক ও উপাদেয় হইতে পারিবে।

 যে গুণসংঘাত জন্য লোকের জীবনী লেখা আবশ্যক হয়, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সে গুণ অনেক ছিল। যে গুণ থাকিলে, মানুষ মানুষকে ভালবাসিতে চাহে এবং যে গুণ থাকিলে, মানুষ বাহ্য জগৎ ভুলিয়া, সেই গুণবানের সম্পূর্ণ সত্তায় হৃদয় পূর্ণ করিয়া ফেলে, সে গুণ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অনেক ছিল। যিনি এক উদ্ভাবনায় চিন্তরাজ্যের সহজ পথ উন্মুক্ত করিয়া দেন, তাঁহার