পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করার সময় সমস্যা ছিল।
২৮৮
বিদ্যাসাগর ।

ধনাঢ্য মতিলাল শীল বিধবা বিবাহ-প্রচলনের উদ্যোগী হইয়াছিলেন। ইহার জন্য তিনি বহু অর্থ ব্যয় করিতে প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তিনি কৃতকার্য্য হন নাই।[১] বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বিধবা-বিবাহ সংক্রান্ত পুস্তক প্রকাশিত হইবার দুই বৎসর পূর্ব্বে পটলডাঙ্গানিবাসী শ্যামাচরণ দাস নামক কর্ম্মকার জাতীয় এক ধনাঢ্য ব্যক্তি আপনার বিধবা কন্যার বিবাহ দিবার উদ্যোগ করিয়াছিলেন। নিম্নলিখিত পণ্ডিতগণ এ বিবাহের ব্যবস্থা দিয়াছিলেন,—কাশীনাথ তর্কালঙ্কার, ভাস্কর বিদ্যারত্ন, রামতনু তর্কসিদ্ধান্ত, ঠাকুরদাস চুড়ামণি, হরিনারায়ণ তর্কসিদ্ধান্ত, মুক্তরাম বিদ্যাবাগীশ। পরে ইঁহাদের অনেকের ভ্রান্তি দূর হইয়াছিল। শ্যামাচরণ দাস বিধবা কন্যার বিবাহ দিতে পারেন নাই।

 যাহা শাস্ত্রসম্মত নহে, যাহা দেশাচার বহির্ভূত, তাহা কোটি কোটি অর্থব্যায়েও সাধারণে প্রচলিত হয় কি? বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কার্য্যে অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি সহায় হইয়াছিলেন।[২] ভ্রান্তিবশে কোথায় হয় ত কেহ বিধবা-বিবাহ, করিয়াছিলেন। কিন্তু বিধবা-বিবাহ কি সমাজে চলিল? যত দিন সমাজের বন্ধন গ্রন্থি দৃঢ় থাকিবে, তত দিন বিধবা-বিবাহ হিন্দুসমাজে প্রচলিত হইবে না।


  1. ১৮৫৫ খৃষ্টাব্দের ১০ই ফেব্রুয়ারীর সংবাদ প্রভাকরে ইহার প্রমাণ পাইবেন।
  2. যুগলসেতু নিবাসী কালীপ্রসন্ন সিংহ সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়াছিলেন, যে ব্যক্তি প্রথম বিধবা বিবাহ করিবে তাঁহাকে এক সহস্র টাকা পারিতোষিক প্রদান করিব। সংবাদ প্রভাকর, দুষ্পাঠ্য খৃষ্টাব্দ, ২৭শে নবেম্বর।