পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৯০
বিদ্যাসাগর।

সুলভ বদরসিকতার পরিচয় দিবেন? রত্নপরীক্ষার ভাষা-ভাবে একটু নমুনা দেখুন,—

 “তিনি নিতান্ত ম্লান বদনে কহিলেন, দেখুন, আমি ব্রজবিলাস লিখিয়া, বিদ্যারত্ন খুড়র মানবলীলাসংবরণের কারণ হইয়াছি। মদীয় বিষময়ী আঘাতেই, তদীয় জীবনযাত্রার সমাপন হইয়াছে, সে বিষয়ে অণুমাত্র সংশয় নাই। আমাদর সমাজে, গোহত্যা ও ব্রহ্মহত্যা অতি উৎকট পাপ বলিয়া পরিগণিত হইয়া থাকে। দুর্ভাগ্যক্রমে বিলাস লিথিয়া কোন্ পাপে লিপ্ত হইয়াছি, বলিতে পারি না। এ অবস্থায়, আর আমার মবিলাস ধু লিখিতে সাহস ও প্রবৃত্তি হইতেছে না। মধুবিলাস দেখিলে, হয়ত, আমায় পুনরায় ঐরূপ পাপে লিপ্ত হইতে হইবেক। বিশেষতঃ স্মৃতিরত্নখুড়ী বুড়ী নহেন; তাঁহাকে ইদানীন্তন প্রচলিত প্রণালী অনুসারে দীর্ঘকাল ব্রহ্মচর্য্য়পালন করিতে হইবেক, সেটা নিতান্ত সহজ ভাবনা নহে। যদি বল, আমরা উদ্যোগী হইয়া পুনঃসংস্কার সম্পন্ন করি; সে প্রত্যাশাও সুদূরপরাহত। এই সমস্ত কারণবশতঃ আর আমার কোনও মতে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিতে সাহস হইতেছে না।”


    লিখিয়াছেন, তিনি উপযুক্ত ভাইপোসহহচর বলিয়া “রত্নপরীক্ষা” লিখিয়াছেন। এ উভয়েই স্বয়ং বিদ্যাসাগর বলিয়া রাষ্ট্র। ব্রিজবিলাসে ব্রজনাথ বিদ্যারত্বকে ও রত্নপরীক্ষায় মধুসূদন স্মৃতিরত্নকে আক্রমণ আছে। ভাষা ও বিরামচিহ্নাদির আলোচনায় সহজে ধারণা হইতে পারে, ইহা বিদ্যাসাগর লিখিত। সত্য সত্য যদি ইহা তাঁহার লিখিত হয়, তাহা হইলে, তাঁহার কলঙ্কের কথা বলিতে হইবে।