পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৯২
বিদ্যাসাগর।

বিধবা কন্যা বা ভগিনীর আজীবন কঠোর ব্যবস্থা করিয়া, আপন সুখসাধনে লালায়িত, তাঁহারা প্রকৃতই হিন্দুর কৃপাপাত্র। বিধবা কন্যা বা ভগিনীর বৈধব্য, পিতা বা ভ্রাতার মর্ম্মান্তিক ক্লেশকর, সন্দেহ কি? তবে ইহা পরকালবিশ্বাসী হিন্দুর স্তোক-সান্ত্বনা কর্ম্মাকর্ম্মের ফলাফল স্মরণে।

 বিধবা-বিবাহের দ্বিতীয় পুস্তক প্রকাশিত হইবার পরও বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবিতাবস্থায় অনেকের প্রতিবাদ পুস্তক প্রকাশিত হইয়াছিল। তাহাদের মধ্যে ৺প্রসন্নকুমার দানিয়াড়ী মহাশয়ের পুস্তক উল্লেখযোগ্য। হিন্দু পাঠকগণকে সে পুস্তক পড়তে অনুরোধ করি। তবে দানিয়াড়ী মহাশয়, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের উপর যে কাপট্য আরোপিত করিয়াছেন, তাহা বিশ্বাস করিতে প্রবৃত্তি হয় না। তিনি বলেন, বিদ্যাসাগর মহাশয় আপন মতসমর্থনার্থ অনেক গ্রন্থের প্রকৃত পাঠ পরিবর্তন করিয়াছেন। ইহার বিচার অবশ্য পণ্ডিতজনই করিবেন; কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবনচরিত সমালোচনা করিলে, এ কাপট্যাচরণ আরোপিত করিতে প্রকৃতই প্রবৃত্তি হয় না। বোধ হয়, গ্রন্থে প্রকৃতই পাঠান্তর আছে। বিদ্যাসাগর কপট, এ কথা স্বপ্নেও আসে না। ভট্টপল্লীনিবাসী পণ্ডিতবর শ্রীযুক্ত পঞ্চানন তর্করত্ন মহাশয়, বিধবাবিবাহের বিরুদ্ধে যে মত প্রকাশ করিয়াছেন,তাহাও হিন্দুসন্তানের পাঠ্য। বঙ্গবাসী আফিস হইতে যে পরাশর-সংহিত। প্রকাশিত হইয়াছে, তাহাতে তর্করত্ন মহাশয়ের মত প্রকাশ পাইয়াছে।

“নষ্টে মৃতে প্রব্রজিতে ক্লীবে চ পতিতে পতৌ।
পঞ্চস্বাপৎসু নারীণাং পতিরন্য বিধীয়তে।”