পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবা-বিবাহ।
২৯৩

 তর্করত্ন মহাশয় এই শ্লোকের এইরূপ বঙ্গানুবাদ করিয়াছেন,—

 “যে পাত্রের সহিত বিবাহের কথাবার্ত্তা স্থির হইয়া আছে, তাহার সহিত কন্যার বিবাহ দিতে হইবে; তবে ভাবী পতি যদি নিরুদ্দেশ হয়, মরিয়া যায়, প্রব্রজ্যা অবলম্বন করে, ক্লীব বলিয়া স্থির হয় বা পতিত হয়, তবে এই পঞ্চপ্রকার আপদে, ঐ কন্যা পাত্রান্তরে প্রদান বিহিত।”

 এইরূপ অনুবাদ করিয়া তর্করত্ন মহাশয় ইহার এইরূপ টীকা করিয়াছেন,—

 “যে অনুবাদ প্রদত্ত হইল, ইহাই বহু পণ্ডিতসম্মত। আরও একটী যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যাও প্রদত্ত হইতেছে। এতদ্বারা নিঃসংশয়ে প্রতিপন্ন হইবে যে, বিধবা-বিবাহ এখনকার প্রচলনীয় নহে। ‘স্বামী' যদি নিরুদ্দেশ হয়, মরিয়া যায়, প্রব্রজ্যা অবলম্বন করে, ক্লীব বলিয়া স্থির হয় বা পতিত হয়, তাহা হইলে নারী পত্যন্তর গ্রহণ করিবে।[১] এ বচনের ইহাই অনুবাদ, কিন্তু এই বচনের অনুমতি-রক্ষা বর্ত্তমান সময়ে নিষিদ্ধ। যথা পরাশর ভাষ্যকৃত আদিত্যপুরাণ।

দীর্ঘকালং ব্রহ্মচর্যাং—————————————
দেবরেণ সুতোৎপত্তির্দত্তা-কন্যা প্রদীয়তে।
কন্য়ানামসবর্ণনাং বিবাহশ্চ-দ্বিজাতিভিঃ॥
দত্তৌরসেতরেষান্তু পুত্রত্বেন পরিগ্রহঃ।
শূদ্রেষু দাসগোপলকুলমিত্রাৰ্দ্ধসীরিণাম্॥
ভোজ্য়ন্নতা গৃহস্থস্য—————————————

  1. মূল শ্লোকের এইরূপ অনুবাদ করিয়াই বিদ্যাসাগর মহাশয় বিধবা-বিবাহ প্রচলনের আন্দোলন করিয়াছেন।