পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২০
বিদ্যাসাগর।

কৌতুকদর্শি লোকসংখ্যাই অধিক বলিতে হইবেক, রঙ্গতৎপর লোকসমরোহে রাজপথ আচ্ছন্ন হইয়াছিল, সার্জ্জন সাহেবের পাহাৱা ওয়ালা লইয়া জনতা নিবারণ করেন, রাত্রি অনুমান ১১ ঘটিকাকালে বর বাহাদুর শকটারোহণে সমাগত হইয়া সভাস্থ হইলে সমাদরপূর্ব্বক তাঁহাকে গ্রহণ করেন, দুই এক টাকা বিদায় পাইবার প্রত্যাশাপযন্ন প্রায় শতাধিক লোক লাল বনাবৃত ভট্টাচার্য্য ও রামগতি প্রভৃতি কয়েকজন ঘটক ও পঞ্চুভাট প্রভৃতি কয়েকজন ভাট, উপস্থিত থাকিয়া গোল করিয়া হাট বসাইয়াছিল, অনুষ্ঠানের কিছুমাত্র বৈলক্ষণ্য হয় নাই।

 বিবাহ সময়ে বরবাহাদুর আসনোপবিষ্ট হইলে উভয় পক্ষের পুরোহিতেরা বিবাহমন্ত্র পাঠ করেন, তাহার কিছুই রূপান্তর করেন নাই, লক্ষ্মীমণি কন্যাদান করেন, দান-সামগ্রী অলঙ্কার সকলই ছিল, পরে বর স্ত্রী-আচারস্থলে গমনকালে এদেশের প্রচলিত প্রথানুসারে “দ্বারষষ্ঠী ঝঁটাকে প্রণাম করেন, ও স্ত্রী আচারস্থলে উলু উলু ধ্বনি, নাকমলা, কানমলা ও “কড়ি দে কিনলেম, দড়ি দে বাঁধলেম, হাতে দিলাম মাকু, একবার ভ্যা করত বাপু” রমণীগণের একান্ত প্রার্থনায় বরবাহাদুর ভ্যাও করিয়াছিলেন।

 এইরূপে উদ্ধাহ নির্ব্বাহ হইলে আহারের ধূম পড়িয়া যায়। প্রায় ছয় শত লোক রঙ্গ দেখিয়া মোণ্ডা ভাঙ্গিয়া গোল করিয়া ঢোল পিটিয়া পাড়া তোলপাড় করিয়া বিদায় গ্রহণ করেন, বাসর ঘরের ব্যাপার আমরা কিছুই জানিতে পারি নাই, যাহা হউক, এই বিবাহে রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গৃহ পবিত্র হইয়াছে, অঙ্গনাগণও বিলক্ষণ আমোদমোদ করিয়াছিলেন, দম্পতির উভয় কুল পরিশুদ্ধ হইল, “যেমন হাড়ি তেমনি সরা” মিলিল, বিদ্যাসাগর মহাশয়ও তদনুসঙ্গে