পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২২
বিদ্যাসাগর।

সুবিবেচনাপুর্ব্বক হিন্দু-বিধবার এই প্রথম বিবাহে সাহেব নিমন্ত্রণ করেন নাই, কারণ সাহেবের আগমন করিলেই সাধারণে শ্রীশচন্দ্রের এই বিবাহকে সাহেব বিবাহ বলিবেন, অধ্যাপকদিগকে আহ্বান করিয়া কাহাকেও চারি টাকা বিদায় দিয়াছেন, এবং পুস্তকে তাঁদিগের নাম স্বাক্ষর করাইয়া লইয়াছেন, আর পূর্ব্বে এক পত্র প্রেরণ করিয়াছিলেন যে ন্যায়রত্ন মহাশয়ের এই নুতন প্রকার বিবাহের নিমন্ত্রণে আগমনপূর্ব্বক যাহারা উৎসাহ প্রদানের ইচ্ছা করেন, তাঁহাবা তাহাতে স্বাক্ষর করিবেন। এই প্রস্তাবে সম্মত হইয়া যাঁহরা স্বাক্ষর করিয়াছিলেন, তাঁহাদিগের নিকটে নিমন্ত্রণ পত্র প্রেরিত হইয়াছিল; অতএব আমরা বোধ করি যে এই বিবাহ-বিবরণ যখন সর্ব্ব সাধারণের গোচরর্থ প্রকাশ হইবেক, তখন সভাস্থ ব্রাহ্মণ-পণ্ডিত ও অপরাপর বাক্তিদিগের নাম প্রকাশ হইবার সম্পূর্ণ সম্ভাবনা আছে। * * *

 “শুনিলাম উক্ত বৈধব্যদশাবিগতা সধবাদশাপ্রাপ্তা রমণীর বয়ঃক্রম ১৫।১৬ বৎসর হইবেক।”

 সেই সময়ে শ্রীগোপীমোহন মিত্র এই স্বাক্ষর কবিয়া এক ব্যক্তি এতৎসম্বন্ধে সংবাদ প্রভাকরে যে পত্র লিখিয়াছিলেন, তাহারও কয়েকটা কথা পাঠকগণের অবশ্য-মনোযোগ্য বলিয়া উদ্ধত হইল,—

 “অনেক স্বধর্ম্ম-পরায়ণ ভদ্র হিন্দু-সন্তান আশ্চর্য্য ও কৌতুহলাক্রান্ত হইয়া কিরূপে চিরকাল-প্রচলিত ও সনাতন-ধর্ম্মবিরুদ্ধ বিধবা বিবাহের মন্ত্রাদি পাঠ হয়, এবং কন্যার শ্বশুরকুল অথবা পিতৃকুল কিংবা মাতৃকুলের মধ্যে কেহ বা সম্প্রদান করে, ইত্যাদি বিবিধ প্রকার বিচিত্র স্বপ্নবৎ অভাবনীয় রঙ্গ দর্শনে গমন করিয়াছিলেন। সভায় দুই সহস্র লোক উপস্থিত ছিল যথার্থ বটে, কিন্তু তন্মধ্যে