পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২৬
বিদ্যাসাগর।

অভীষ্ট সিদ্ধ করুন। ইহার অপেক্ষা উত্তম অবসব আর পাইবেন না। লজ্জায় সকলে মস্তক অবনত করিলেন।*

 বিধবা-বিবাহের বিপক্ষবাদীদের মধ্যে কেহ কেহ ধৈর্য্যাবলম্বন করিতে না পারিয়া, বিদ্যাসাগর মহাশয়কে অজস্র গালিমন্দ দিত। এতৎসম্বন্ধে এইরূপ একটা গল্প আছে,—“এক দিন বিদ্যাসাগর মহাশয় বর্দ্ধমান হইতে কলিকাতায় আসিতেছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় গাড়ীর যে কামরায় ছিলেন, পাণ্ডুয়া ষ্টেশনে সেই কামরায় একজন ব্রাহ্মণ-পণ্ডিত উঠিয়াছিলেন। ব্রাহ্মণ বিদ্যাসাগরকে জানিতেন না। তিনি বিদ্যাসাগরকে উদ্দেশ করিয়া গালিমন্দ দিতেছিলেন। পরে হুগলী ষ্টেশনে নামিয়া তিনি জানিতে পারেন যে, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সাক্ষাতেই বিদ্যাসাগরকে গালি দেওয়া হইয়াছে। অকস্মাৎ এই ব্যাপার বুঝিতে পারিয়া ব্রাহ্মণ কেমন যেন সংজ্ঞাহীন হইয়া, ষ্টেশনের প্লাটফরমে পড়িয়া গিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহার শুশ্রূষা করেন এবং পাথেয়-স্বরূপ কিঞ্চিৎ অর্থসাহায্যও করেন।”

 বিধবা-বিবাহের প্রতিবাদ সম্বন্ধে অমূলা বাবু হিতবাদীতে এই রহস্যজনক গল্প লিখিয়াছিলেন,—"স্কুল-ইনস্পেক্টর প্রাট্‌ সাহেব, বিদ্যাসাগর মহাশয়কে জিজ্ঞাসা করেন, আপনার পুস্তকের যে সব প্রতিবাদ বাহির হইয়াছে, তাহার মধ্যে কাহার প্রতিবাদ ভাল? যে ব্যক্তি বেশী গাল দিয়াছিলেন, বিদ্যাসাগর মহাশয়, রহস্য কহিয়া তাঁহার নাম করেন। প্রাট্‌ সাহেব, কথাটা সতা ভাবিয়া তাঁহার নাম টুকিয়া লন। পরে তিনি সেই ব্যক্তিকে ডিপুটী ইনস্পেক্টর পদে নিযুক্ত করেন। সেই ব্যক্তি এক দিন প্রকৃত ব্যাপার জানিতে পারিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় বলেন,