পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবা-বিবাহ।
৩২৯

কলিকাতা হইতে বীরসিংহ গ্রামে গমন করিতে, পিতা-মাতা উভয়েই আপনাদের মনোগত অভিপ্রায় তাহাকে বিদিত করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় একটু হাসিয়া বলিলেন,—“উভয়েরই কথা থাকিবে।” বিদ্যাসাগর মহাশয় উভয়েরই মনস্তুষ্টি-সাধক কার্ষ্যের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। পিতামাতার প্রতি যাঁহার এরূপ ভাব, তিনি তাঁহাদের অসম্মতিক্রমে কোন কার্য্যই করিতে পারিতেন না। পিতামাতা ব্যতীত তিনি জগতে আর কোন ব্যক্তির মুখাপেক্ষী হইযা, অনুষ্ঠিত কার্য্য হইতে পশ্চাৎপদ হইতেন না।

 এই বিধবা-বিবাহ-ব্যাপারে তাঁর শিক্ষাগুরু প্রেমচাঁদ তর্কবাগীশ মহাশয়ের মত ছিল না; কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহাতেও পশ্চাৎপদ হন নাই। এতৎসম্বন্ধে তাঁহাদের উভয়ের যে কথাবার্ত্তা হইয়াছিল, তাহা এইখানে উদ্ধত হইল,—

 “এক দিন তর্কবাগীশ বিদ্যাসাগরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়া বলেন,—“ঈশ্বর, বিধবা-বিবাহের অনুষ্ঠান হইতেছে বলিয়া প্রবল জনরব। কতদূর কি হইয়াছে, জানি না। এক্ষণে জিজ্ঞাস্য এই যে, দেশের বিজ্ঞ ও বৃদ্ধমণ্ডলীকে স্বমতে আনিতে কৃতকার্য্য হইয়াছ কি না? যদি না হইয়া থাক, তবে অপরিণামদর্শী নব্যদলর কয়েকজনমাত্র লোক লইয়াই এইরূপ গুরুতর কার্য্যে তাড়াতাড়ি হস্তক্ষেপ করিবার পূর্ব্বে বিশেষ বিবেচনা করিবে।” বিদ্যাসাগর বলিলেন,— “মহাশয়! আপনার প্রশ্নভঙ্গিতে আমার উদ্যমভঙ্গের আশঙ্কা দেখিতেছি; আপনাকে অন্তরের সহিত শ্রদ্ধা করিয়া থাকি। নচেৎ আপনাকে’—তর্কবাগীশ তাঁহার কথা শেষ না হইতেই বলিলেন, ‘নচেৎ আমাকে এই আসন