পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পদত্যাগ।
৩৪১

স্বিতা দেখিয়া, বাস্তবিকই বিস্ময়াম্বিত হইয়াছিলেন। তিনি উপায়ান্তর না দেখিয়া, অগত্যা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পদ-পরিহরি মঞ্জুরু করেন।[১]

 বিদ্যাসাগর মহাশয়কে পদ-পরিত্যাগ করিতে দেখিয়া, তাঁহার মাতা, পিতা, আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব—সকলেই সংক্ষুব্ধ হইয়াছিলেন। তৎকালে তাঁহাকে কোন স্কুল-ইনস্পেক্টর বলিয়াছিলেন,—“বিদ্যাসাগর! তুমি ভাল কাজ করিতেছ না। দেখ, আজকালিকার বাজারে পাঁচ শত টাকা বেতনের পদ দুর্লভ।বিশেষতঃ তোমার মত একজন বাঙ্গালী পণ্ডিতের পক্ষে আরও দুর্লভ। তুমি পদ পরিত্যাগ করিলে বটে; কিন্তু তোমার চলিবে কিসে?”

 বিদ্যাসাগর মহাশয়, এক্ষেত্রে হাসিয়া বলিয়াছিলেন,—“আমি জানি, মানুষের সম্ভ্রমই জগতে দুর্লভ। চলিবার কথা কি বলিতেছ? আমি যখন সংস্কৃত কলেজের সেক্রেটারীর পদ পরিত্যাগ করিয়াছিলাম, তখন আমার কি ছিল? এখন তবু ত আমার প্রণীত ও প্রকাশিত পুস্তকের কতক আয় আছে।”

  1. শ্রীযুক্ত ক্ষেত্রমোহন সেনগুপ্ত বিদ্যারত্ন মহাশয়ের মুখে শুনিয়াছি,— “সিপাহী বিদ্রোহের সময় অনেকগুলি আহত সিপাহী সংস্কৃত কলেজে আশ্রয় লইযাছিল। এই জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয়, ডাইরেকটরের অনুমতি না লইয়াও সংস্কৃত কলেজ বন্ধ রাখিয়াছিলেন। সিভিলিয়ান্ ইয়ঙ্ সাহেবের সহিত মনোবাদের ইহাও একটী কারণ। কোথাও কোথাও এরূপ জল্পনা শুনা যায়, ইয়ঙ্ সাহেব, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের উপর বিরক্ত হইয়া তাঁহাকে পদচ্যুত করিবার জন্য তাঁহার দোষান্বেষেণে প্রবৃত্ত হইযাছিলেন। শেষে তিনি এই দোষ পান যে, বিদ্যাসাগর মহাশয় সহকারী 'লেফাফার' ভিতর আপনার পুস্তক পুরিয়া, স্থানান্তরে পাঠাইয়াছিলেন। এ কথা ছোট লাটকে অবগত করা হয়। বিদ্যা-