পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ওকালতির প্রবৃত্তিত্যাগ।
৩৪৫

আধুনিক সভ্য-সমাজে পূর্ব-প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়া গিয়াছেন। যাবৎ এ জগৎ, তাবৎই তাঁহার প্রতিষ্ঠা।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ভ্রাতা বিদ্যারত্ন মহাশয়, নিম্নলিখিত বৃত্তান্তটী লিথিয়াছেন;—

 “যে সময় বিদ্যাসাগর মহাশয়, প্রিন্সিপাল পদ পরিত্যাগ করেন, সে সময় কলিকাতা সুপ্রিম-কোর্টের প্রধান বিচারক কলবিন্ সাহেব, বিদ্যাসাগর মহাশয়কে উকীল হইবার জন্য পরামর্শ দেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহার পরামর্শানুসারে উকীল হওয়া যুক্তিসঙ্গত কি না, তাহা স্থির করিবার জন্য প্রত্যহ সকালে ও সন্ধ্যার সময়ে, তাৎকালিক প্রধান উকীল দ্বারকানাপ মিত্রের কার্য্যাবলী দেখিবার জন্য তাঁহার বাটীতে যাইতেন।[১] তিনি তথায় গিয়া দেখেন যে, টাকার জন্য হিন্দুস্থানী মোক্তারদের সঙ্গিত হুড়াহুড়ি করিতে হয়। দেখিয়া শুনিয়া ওকালতী কর্ম্মে তাহার ঘৃণা জন্মে। পরে তিনি কলবিন্ সাহেবকে গিয়া আপনার অভিমত প্রকাশ করেন। কলবিন্ সাহেব বলেন, “তোমার মত পণ্ডিত লোককে টাকার জন্য মোক্তারদের সঙ্গে হুড়াহুড়ি করিতে হইবে না। তুমি ওকালতী কর।” বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সে কার্য্য হইল না।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের গ্রামবাসী তদীয় পরম স্নেহভাজন ঐযুক্ত শশিভূষণ সিংহ মহাশয় আমাকে বলিয়াছেন,—

 “দ্বারকানাথ মিত্র, কেবল মক্কেলদের কাগজ-পত্র লইয়া ব্যস্ত থাকিতেন। তাঁহার পড়াশুনার সময় থাকিত না। বিদ্যাসাগর মহাশয়, ইহা স্বচক্ষে দেখিয়াছিলেন। মোকদ্দাম লইয়া থাকিলে

৪৪
  1. এই দ্বারকানাথ মিত্র পরে হাইকোর্টের জজ হন