পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতামহীর শ্রাদ্ধ।
৩৪৭

এ প্রদেশের বহুসংখ্যক ব্রাহ্মণ ও পণ্ডিতগণের সমাগম হইয়াছিল। অনেকে মনে করিয়াছিল, বিদ্যাসাগরের পিতামহীর শ্রাদ্ধে কোনও ব্রাহ্মণ ভোজন করিতে আসিবেন না; তাহা হইলেই পিতৃদেব মনোদুঃখে দেশত্যাগী হইবেন। যাহার এরূপ মনে করিয়াছিল, তাহারা অতি নির্ব্বোধ। কারণ, অগ্রজ মহাশয, দেশে অবৈতনিক ইংরেজি, সংস্কৃত বিদ্যালয় সংস্থাপন করিয়ছিলেন; প্রায় চারি পাঁচ শত বালককে বিনা বেতনে শিক্ষা ও সমস্ত বালককে পুস্তক কাগজ শ্লেট প্রভৃতি প্রদান করিতেন। ইহা ভিন্ন বাটতে প্রত্যহ ৬০টী বিদেশস্থ সম্ভ্রান্ত ও অধ্যাপকের বিদ্যার্থী সন্তানগণকে অন্নবস্ত্র প্রদান করিয়া অধ্যয়ন করাইতেন। মধ্যে মধ্যে অনেক ভিন্ন গ্রামের ছাত্রগণের চাকরি করিয়া দিতেন। তিনি দাতব্য ঔষধালয় স্থাপন করিয়ছিলেন। ডাক্তার বিনা ভিজিটে গ্রামের ও সন্নিহিত গ্রামবাসীদিগের ভবনে চিকিৎসা করিতে যাইত। নাইট স্কুলের ছাত্রগণের মধ্যে অনেকেই কলিকাতার বাসায় অন্নবস্ত্র পাইয়া, মেডিকেল কলেঞ্জে বিদ্যাশিক্ষা করিয়া চিকিৎসক হইয়াছিল। এতদ্ব্যতীত অনেকেই অর্থাৎ কি ধনশালী, কি মধ্যবিত্ত, কি দরিদ্র সকল সম্প্রদায়ের লোকই, বিপদাপন্ন হইয়া আশ্রয় লইলে, বিপদ হইতে পরিত্রণ পাইত। চাঁদা প্রদান করিয়া, বিস্তর বিদ্যালয় স্থাপন করিয়া, তিনি সাধারণের অতিশয় প্রিয়পত্র হইয়াছিলেন। এবম্বিধ লোকের পিতামহীর শ্রাদ্ধে কেমন করিয়া শত্রুপক্ষ বিঘ্ন জন্মইতে পারে?”

 শ্রাদ্ধে বিঘ্ন ঘটাইবার চেষ্টা যে না হইয়াছিল, এমন নহে; কিন্তু উক্ত অংশের কথাগুলি অতান্ত সন্দেহোদীপক, তৎপক্ষে সন্দেহ নাই। কোন সুত্রে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট বাধা