পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪৮
বিদ্যাসাগর।

নহেন, এমন কোন প্রকৃত ধর্ম্মচারী শাস্ত্রদর্শী খ্যাতনামা ব্রাহ্মণপণ্ডিত শ্রাদ্ধোপলক্ষে, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাড়ীতে আহার করিয়াছিলেন কি না, লোকে ইহা জানিতে ইচ্ছুক হয়। যাহাই হউক, বিদ্যাসাগর মহাশয়, পিতামহীর সপিণ্ড উপলক্ষেও পিতাকে অনেক অর্থসাহায্য করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় আত্মীয় পরিবারের স্ব-বিশ্বাসোচিত কোন ধর্ম্মানুষ্ঠানে কোনরূপ ব্যাঘাত করিতেন না; বরং আবশ্যকমত অর্থসাহায্য করিতেন। এরূপ কার্য্যের ফলাফল-সম্বন্ধে তাঁহার মতামত, কেহই জানিতে পারিতেন না; কিন্তু কোনরূপ ব্যাঘাত দেওয়া যে অকর্ত্তব্য, তাহা তিনি অনেক সময়েই বলিতেন।

 পিতামহীর মৃত্যুতে বিদ্যাসাগর মহাশয় বড় শোকাকুল হইয়াছিলেন। পিতামহী তাঁহাকে প্রাণপেক্ষা ভালবাসিতেন। তিনিও পিতামহীকে অন্তরের সহিত শ্রদ্ধা-ভক্তি করিতেন। বাল্য-কালে কলিকাতায় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পীড়া হইলে, এই পিতামহী বীরসিংহ হইতে ছুটির আসিয়া, তাঁহার সেবা-শুশ্রুষা করিতেন এবং রোগ অসাধ্য হইলে, সঙ্গে করিয়া বাড়ী লইয়া যাইতেন। যৌবনে কার্য্যাবস্থায়ও এইরূপ ভাবই ছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় যা কিছু আদর-আবদার তাঁহারই নিকট করিতেন। তিনি বিদ্যাসাগরকে এতই ভালবাসিতেন যে, কোন গুরুতর বিষয়ে অবাধ্য হইলেও, তিনি বিদ্যাসাগরের উপর রাগ করতেন না। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বংশে নিয়ম ছিল,—পিতা, মাতা, পিতামহ বা পিতামহী, মন্ত্র-দীক্ষা দিবেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পিতা বিদ্যাসাগর মহাশয়কে দুই এক বার মন্ত্র দিবার প্রস্তাব করিয়া, বড় সুবিধা বিবেচনা করেন নাই; সুতরাং তিনি সে বিষয়ে ক্ষান্ত হয়েন। পরে তাঁহার