পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ।
৩৬৩

প্রতিপালনের সদুপায় চিন্তা করিতে লাগিলেন। অবশেষে তিনি সারদা প্রসাদের উপকারার্থে “সোমপ্রকাশ” প্রকাশ করেন।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অনুরোধে সারদা প্রসাদ পরে বর্দ্ধমান রাজবাটীতে মহাভারতের অনুবাদ কার্য্যে এবং লাইব্রেরিয়ান্-পদে প্রতিষ্ঠিত হয়েন। বর্দ্ধমানরাজ মহাতাপচন্দ্র বাহাদুর বিদ্যাসাগর মহাশয়কে যথেষ্ট ভক্তি করিতেন। ১২৫৪ সালে (১৮৪৭ খৃষ্টাব্দে) বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত মহারাজের প্রথম সাক্ষাৎ পরিচয় হয়। সেই সময়ে বিদ্যাসাগর মহাশয় বাবু রামগোপাল ঘোষজ ও ভূকৈলাসের বাজা সত্যশরণ ঘোষালের সহিত বর্দ্ধমান দর্শনার্থ গমন করেন। তাঁহারা তিন জনে এক বাসায় ছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় রাজবাটী সিদায় উদর পূর্ণ করিতে অসম্মত হইয়া অপর কোন বন্ধুর বাড়ীতে ভোজনক্রিয়া সম্পন্ন করিতেন। মহারাজ এই সংবাদ পাইয়াছিলেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত আলাপ-পরিচয় করিবার অভিপ্রায়ে তাঁহাকে বাড়ীতে আনাইবার জন্য লোকপ্ররণ করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রথম যাইতে সম্মত হয়েন নাই; কিন্তু নানা সাধ্য-সাধনায় শেষে অনুরোধ এড়াইতে পারেন নাই। বিদ্যাসাগরের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় করিয়া মহারাজ আপনাকে ধন্য জ্ঞান করিয়াছিলেন। বিদায়-সময়ে মহারাজ বাহাদুর তাঁহাকে উপহার স্বরূপ ৫০০ (পাঁচ শত) টাকা ও এক জোড়া শাল দিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়, কিন্তু উহা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন,—“আমি কাহার ও দান লই না। কলেজের বেতনেই আমার স্বচ্ছন্দে চলে। চতুষ্পাঠীর অধ্যাপকগণ এইরূপে বিদায় পাইলে অনেকটা উপকৃত হইতে পারেন।” রাজা বিস্মিত হইলেন!