পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৭৪
বিদ্যাসাগর।

হের আন্দোলনকালে একটা মনোমালিন্য সংঘটিত হয়। শুনিতে পাই, বিদ্যাসাগর মহাশয় বিধবা বিবাহের অন্দালনে প্রথম বাবু রমাপ্রসাদ রায়ের নিকট হইতে সবিশেষ সহানুভূতি পাইয়াছিলেন; কিন্তু কার্য্যকালে সাহায্য পাওয়া দূরে থাকুক, তাঁহাকে দুই একটা মর্ম্মান্তিক কথা শুনিতে হইয়াছিল।[১] বিদ্যাসাগর মহাশয় রমাপ্রসাদ রায়ের বাড়ীতে প্রায়ই যাইতেন; কিন্তু ইহার পর গতিবিধি একরূপ বন্ধ হইয়াছিল। রমাপ্রসাদ রায়ের মৃত্যুসংবাদে কিন্তু বিদ্যাসাগর অশ্রু সংবরণ করিতে পারেন নাই। শক্তিসম্পন্ন পুরুষ শক্তিপূজকের চিরকাল পূজনীয়। বিদ্যাসাগর প্রকৃত শক্তিসেবী। রমাপ্রসাদ রায় ও প্রকৃত শক্তিশালী পুরুষ ছিলেন। তজ্জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয় রমাপ্রসাদ বাবুর বিয়োগ জন্য দুঃখিত হয়েন।

  1. এই কথা সম্বন্ধ মতবিরোধ আছে। ‘সঞ্জীবনী’তে প্রকাশিত হইয়াছিল—“শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন মহাশয়ের সর্ব্ব প্রথম বিধবা বিবাহ হয়। তখন কলিকাতার অনেক বড় লোক এ বিষয়ে সাহায্য করিতে এবং বিবাহস্থলে উপস্থিত হইতে প্রতিশ্রত থাকিয়া একখানি প্রতিজ্ঞাপত্রে স্বাক্ষর করেন। লজ্জার বিষয় এই যে কেহই উপস্থিত হন নাই। এ বিবাহের পূর্ব্বে তিনি স্বাক্ষরকারিগণের মধ্যে মহাত্মা রাজা রামমোহন রাযের পুত্র রমাপ্রসাদ রায়ের সহিত সাক্ষাৎ করিতে যান। রমাপ্রসাদ রায় বলিলেন,—‘আমি ভিতরে ভিতরে আছিই তো, সাহায্যও করিব, বিবাহস্থলে নাই গেলাম?” এই কথা শুনিয়া ঘৃণা এবং ক্রোধে সিদ্যাসাগর মহাশয়ের কিয়ৎক্ষণ কথা বাহির হইল না। তাহার পর দেওয়ালে স্থিত মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের ছবির প্রতি লক্ষ্য করিয়া বলিলেন,—‘ওটা ফেলে দাও, ফেলে দাও।’ এরূপ বলিয়া চলিয়া গেলেন।”
     এতৎসম্বন্ধে পণ্ডিত মহেন্দ্রনাথ বিদ্যানিধি মহাশয় ‘প্রকৃতি’ নামক সংবাদ-