পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতৃ পরিচয়।
১৭

ন্যায়ালঙ্কার, সুপ্রসিদ্ধ চতুর্ভূজ ন্যায়রত্নের নিকট অধ্যয়ন করেন। ন্যায়ালঙ্কার মহাশয়, ন্যায়রত্ন মহাশয়ের প্রিয় শিষ্য ছিলেন, তাহার অনুগ্রহে ও সহায়তায় তিনি, কলিকাতায় বিলক্ষণ প্রতিষ্ঠাপন্ন হয়েন ঠাকুরদাস, এই সন্নিহিত জ্ঞাতির আবাসে উপস্থিত হইয়া, আত্মপরিচয় দিলেন এবং কি জন্য আসিয়াছেন, অশ্রুপূর্ণলোচনে তাহা ব্যক্ত করিয়া, আশ্রয় প্রার্থনা করিলেন। ন্যায়ালঙ্কার মহাশয়ের সময় ভাল, তিনি অকাতরে অন্ন-ব্যয় করিতেন, এমন স্থলে, দুর্দশাপন্ন আসন্ন জ্ঞাতিসন্তানকে অন্ন দেওয়া দুরূহ ব্যাপার নহে। তিনি সাতিশয় দয়া ও সবিশেষ সৌজন্ত প্রদর্শনপূর্বক, ঠাকুরদাসকে আশ্রয় প্রদান করিলেন।

 “ঠাকুরদাস, প্রথমতঃ বনমালিপুরে, তৎপরে বীরসিংহে; সংক্ষিপ্তসার ব্যাকরণ পড়িয়াছিলেন। এক্ষণে তিনি, ন্যায়ালঙ্কার মহাশয়ের চতুষ্পাঠীতে, রীতিমত সংস্কৃত বিদ্যার অনুশীলন করিবেন, প্রথমতঃ এই ব্যবস্থা স্থির হইয়াছিল এবং তিনিও তাদৃশ অধ্যয়ন-বিষয়ে, সবিশেষ অনুরক্ত ছিলেন; কিন্তু, ষে উদ্দ্যেশ্যে, তিনি কলিকাতায় আসিয়াছিলেন, সংস্কৃতপাঠে নিযুক্ত হইলে,তাহা সম্পন্ন হয় না। তিনি, সংস্কৃত পড়িবার জ্ন্য, সবিশেষ ব্যাগ্র ছিলেন, যথার্থ বটে, এবং সর্ব্বদাই মনে মনে প্রতিজ্ঞ করিতেন, যত কষ্ট, যত অসুবিধা হউক না কেন, সংস্কৃতপীঠে প্রাণপণে যত্ন করিব; কিন্তু, জননীকে ও ভাই, ভগিনীগুলিকে কি অবস্থায রাখিয়া অসিয়াছেন, যখন তাহা মনে হইত, তখন সে ব্যগ্রতা ও সে প্রতিজ্ঞা, তদীয় অন্তঃকরণ হইতে, একেবারে অপসারিত হইত। যাহা হউক, অনেক বিবেচনার পর, অবশেষে ইহাই অবধারিত হইল,