পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪১৬
বিদ্যাসাগর।

পিতামাতার মৃত্যুর পর তিনি সময়ে সময়ে তাঁহাদের প্রতিকৃতি দেখিয়া চক্ষের জলে ভাসিয়া যাইতেন। প্রত্যহ তিনি দুইবার করিয়া তাঁহাদের প্রতিকৃতি দেখিতেন।[১]

 ১২৭২ সালের ১৬ই বৈশাখ বা ১৮৬৫ খৃষ্টাব্দের ২৭শে এপ্রেলে সংস্কৃত কলেজের প্রিন্সিপাল প্রসন্নকুমার সর্ব্বাধিকারী মহাশয় পদত্যাগ করিয়াছিলেন। প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রিন্সিপাল সার্টক্লিফ্ সাহেবের সহিত তাঁহার, মনোবাদ হইয়াছিল। সংস্কৃত কলেজের দ্বিতলের একটা গৃহে প্রেসিডেন্সি কলেজের লাইব্রেরী ছিল। সেই ঘরে লাইব্রেরীর স্থান সঙ্কুলন হইত না। যে ঘরে সংস্কৃত কলেজের লাইব্রেরী ছিল, সার্টক্লিফ্ সাহেব প্রেসিডেন্সি কলেজের লাইব্রেরীর

  1. পিতা ঠাকুরদাসের কাশীবাসসম্বন্ধে পুত্র নারায়ণ বাবুর মুখে এই কথা শুনিয়াছি,—পিতার কাশীবাস করিবার প্রস্তাব শুনিয়া, বিদ্যাসাগর মহাশয় বাড়ী যান। তথায় নির্জ্জনে তিনি পিতাকে বলেন,—“আপনি কাশীবাসী হইবেন কেন? যদি পুণ্যার্থে যান, তবে কথা নাই, যদি সংসার বৈরাগ্যে যান, তাতেও কথা নাই; কিন্তু সুখস্বচ্ছন্দে সংসার চালাইবার উপযুক্ত টাকা পান না বলিয়া যদি যান, তাহা হইলে আমি টাকার বন্দোবস্ত করিতে পারি।” পিতা বলিলেন,—“পুণ্যার্থেই যাইব।” বিদ্যাসাগর মহাশয় দ্বিরুক্তি করেন নাই। পিতা যখন কাশী যাইবার জন্য উদ্যোগী হইয়া কলিকাতায় আসেন, তখন বিদ্যাসাগর মহাশয় পুত্র নারায়ণকে বলিলেন,—দেখ্, তোর ঠাকুরদাদার যাহাতে কাশী না যাওয়া হয়, তাহার চেষ্টা কর্ দেখি।” অতঃপর নারায়ণচন্দ্র ঠাকুরদাদার সঙ্গ ছাডিলেন না। ঠাকুরদাদা নাতির মায়ায় জড়াইয়া পড়িলেন। ক্রমে কাশী যাওয় বন্ধ হইবার উপক্রম হইল। এমন সময় কনিষ্ঠ পুত্র ঈশানচন্দ্র আসিয়া উত্তেজন-বাক্যে পিতার মত পরিবর্ত্তন করেন।