“বীরসিংহ গ্রামে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মাতা প্রত্যই ৪।৫ শত লোক খাওয়াইয়া থাকেন।”
ইহার পর বিদ্যাসাগর মহাশয় বীরসিংহ এবং নিকটবর্ত্তী ১০।১২ খানি গ্রামের নিরন্ন লোকদিগের জন্য অন্নসত্র স্থাপন করিয়াছিলেন। প্রথম প্রথম বীরসিংহের অন্নসত্রে এক শত করিয়া লোক অন্ন পাইয়াছিল।
ক্রমে অন্নার্থী দলে দলে বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। বিদ্যাসাগর মহাশয়ও তদনুপাতে সাহায্য-পরিমাণ বাড়াইয়া দিলেন। তিনি স্বয়ং অন্নসত্রের ব্যবস্থা করিয়া নিশ্চিন্ত ছিলেন না। যাহাতে এ বিষয়ে গবর্ণমেণ্টের মনোযোগ আকৃষ্ট হয়, তৎপক্ষে তিনি সর্ব্বাগ্রে যত্নশীল হইয়াছিলেন। বাবু ঈশ্বরচন্দ্র মিত্র প্রথমতঃ উদাসীন ছিলেন বটে, কিন্তু অবশেষে তিনি দুর্ভিক্ষের দারুণতা অনুভব করিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মধ্যম ভ্রাতা দীনবন্ধু ন্যায়রত্ন মহাশয়কে লইয়া ঘাটাল, ক্ষীরপাই-রাধানগর, চন্দ্রকোণা প্রভৃতি স্থান পরিদর্শন করিয়া অনসত্র স্থাপন করিবার জন্য গবর্ণমেণ্টকে অনুরোধ করেন। তাঁহার অনুরোধ রক্ষিত হইয়াছিল। জুন, জুলাই, আগষ্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর এই কয় মাস বহুসংখ্যক লোক সরকারী অন্নছত্রে অন্ন পাইয়াছিল।
যে কয় মাস দুর্ভিক্ষ প্রবল ছিল এবং যে কয় মাস অন্নসত্রের কাজ চলিয়াছিল, বিদ্যাসাগর মহাশয় সেই কয় মাস প্রতি মাসে একবার করিয়া বাড়ী যাইতেন। তাঁহার অনুপস্থিতিতে তাঁহার ভ্রাতা, পুত্র প্রভৃতি আত্মীয় স্বজনের উপর অন্নসত্রপরিদর্শনের ভার ছিল। তাঁহারা কোন রূপই ত্রুটি করিতেন না। যাহারা অন্নসূত্রে আহার না করিত, তাহারা প্রত্যহ