পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২৪
বিদ্যাসাগর।

 রাজা প্রতাপচন্দ্রের মৃত্যুর পর পাইকপাড়া রাজপরিবারের শোচনীয় অবস্থা উপস্থিত হইয়াছিল। রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহের পিতামহী রাণী কাত্যায়নীর অনুরোধে বিদ্যাসাগর মহাশয় তাৎকালিক বঙ্গেশ্বর বিডন্ সাহেবকে অনুরোধ করিয়া পাইকপাড়া ষ্টেট, কোর্ট অব্ ওয়ার্ডের অন্তর্ভূত করিয়া দেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাৎকালিক পাইকপাড়ার নাবালক রাজপুত্রদিগকে সঙ্গে করিয়া বঙ্গেশ্বরের নিকট লইয়া গিয়াছিলেন। বিষয় কোর্ট অব ওয়ার্ডের অন্তর্ভুত হইবার সম্বন্ধে অনেকটা গোলযোগ হইয়াছিল। বাহুল্যভরে তদুল্লেখে নিবৃত্ত হইলাম। তবে একটা কথা বলা নিতান্ত আবশ্যক। কলেক্টরী খাজনার দায়ে পাইকপাড়া রাজবংশের বিষয় বিক্রীত হইবার সম্ভাবনা হইয়াছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অনুরোধে বঙ্গেশ্বর সে যাত্রা বিক্রয়দায় হইতে উদ্ধার করেন। কোর্ট অব্ ওয়ার্ডে বিষয় গিয়াছিল বটে; কিন্তু নাবালক রাজপুত্রদিগকে ওয়ার্ডের অধীন বিদ্যালয়ে থাকিতে হয় নাই। যাহাতে রাজকুমারদিগকে ওয়ার্ডের বিদ্যালয়ে যাইতে না হয়, তাহার জন্য রাণী কাত্যায়নী বিদ্যাসাগর মহাশয়কে বাষ্পাকুলিত লোচনে অনুরোধ করেন। এতদর্থে বিদ্যাসাগর মহাশয় বঙ্গেশ্বরকে অনুরোধ করিয়াছিলেন। অনুরোধ রক্ষা হইয়াছিল।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রায়ই পাইকপাড়া রাজবাটীতে যাইতেন। একদিন পথিমধ্যে তাঁহার পূর্ব্ব-পরিচিত রামধন নামে এক মুদি তাঁহাকে ডাকিয়া আপনার দোকানে লইয়া যায়। রামধন বিদ্যাসাগর মহাশয়কে খুড়া খুড়া বলিয়া ডাকিত। রামধনের সাদর অভ্যর্থনায় আপ্যায়িত হইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় অম্লানবদনে তাহার দোকানের সম্মুখে ঘাসের উপর বসিয়া থেলো হুকার